দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী। ছবি— পিটিআই।
হায়দরাবাদে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের শেষ দিনে দলকে মানুষের কাছে যাওয়ার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, রবিবার দলের নেতাকর্মীদের হিন্দু ছাড়াও অন্যান্য বঞ্চিত ও নিপীড়িত সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করার কথা বলেন মোদী।
একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত, এক দলীয় নেতা বৈঠকে মোদী কী কী বলেছেন তা জানাতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘তিনি বললেন, অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যেও বঞ্চিত এবং নিপীড়িত মানুষ আছেন। আমাদের শুধু হিন্দুদের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়লে চলবে না। আমাদের সমস্ত বঞ্চিত ও নিপীড়িতের জন্য কাজ করা উচিত। এ জন্য ‘স্নেহ যাত্রা’ শুরু করা উচিত।’’
প্রসঙ্গত, জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে যখন মোদী এ কথা বলছেন, তার ঠিক কয়েক দিন আগে উত্তরপ্রদেশে দু’টি উপনির্বাচনে জয়লাভ করেছে বিজেপি। ঘটনাচক্রে, সেই দুই লোকসভা আসন— আজমগড় ও রামপুরে জয়-পরাজয় স্থির করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রয়েছে মুসলিম জনসংখ্যার। মনে করা হচ্ছে, মোদী এ কথা বলে আসলে ওই দুই এলাকার পাসমান্দা মুসলিমদের নিয়ে দলীয় নেতৃত্বকে বার্তা দিতে চাইলেন। যারা সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া। দ্রৌপদী মুর্মুর মতো আদিবাসী নেত্রীকে দেশের রাষ্ট্রপতি পদের জন্য তুলে ধরে, দেশের আদিবাসী সম্প্রদায়ের কাছে সদর্থক বার্তা পৌঁছে দিতে পেরেছে বিজেপি। পাশাপাশি হিন্দু ছাড়াও অন্য সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভাবে দুর্বল জনসংখ্যাকেও পাশে পেতে ঝাঁপাবে বিজেপি, রবিবার মোদীর বক্তব্যে তা-ও স্পষ্ট হল, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। সূত্রের খবর, মোদী বৈঠকে বলেছেন, দ্রৌপদীর সহজ সরল জীবনযাত্রা, তাঁর লড়াইয়ের কথা তৃণমূল স্তরে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত বছরও মোদী বিজেপির সাধারণ সম্পাদকদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন, তাঁরা যেন হিন্দু ছাড়াও অন্যান্য সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষেরও মন জয় করার দিকে নজর দেন। কেরলে সংখ্যালঘু ক্রিশ্চান সম্প্রদায়কেও বিজেপির পাশে রাখার কথা বলেছিলেন তিনি। যদিও তাতে খুব একটা সফল হয়নি গেরুয়া শিবির। কিন্তু বছর ঘুরলেও, মোদীর মুখে ফিরে এল অনেকটা একই রকম কথা।
হায়দরাবাদের বৈঠকেই অমিত শাহ দাবি করেছেন, আগামী দিনে বাংলা, কেরল, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানায় সরকার গড়বে বিজেপি। রাজনৈতিক অঙ্ক বলছে, সেই লক্ষ্যে নিজেদের ভোটব্যাঙ্কের আয়তন আরও বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে গেরুয়া শিবির। তাই কি বিজেপির চিরাচরিত ভোটব্যাঙ্ক— হিন্দু ছাড়া অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়েরও মন জয়ের বার্তা দিলেন মোদী।