সুধা মূর্তি। — ফাইল চিত্র।
ভারতীয় শিক্ষাবিদ এবং লেখক সুধা মূর্তিকে রাজ্যসভায় সাংসদ হিসাবে মনোনীত করলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। শুক্রবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স (সাবেক টুইটারে) হ্যান্ডলে পোস্ট করে এই ঘোষণা করেছেন।
মোদী তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু রাজ্যসভার জন্য সুধা মূর্তিকে মনোনীত করেছেন। এই খবরে আমি খুব খুশি। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুধাজির অবদান অনস্বীকার্য। সামাজিক, জনহিতকর এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তিনি অনেক কাজ করেছেন।’’
প্রধানমন্ত্রীর মুখে বার বারই নারী শক্তির কথা শোনা যায়। নারী দিবসে এই ঘোষণা খুবই উল্লেখযোগ্য বলে মনে করছেন অনেকে। মোদীর কথায়, ‘‘সংসদের উচ্চকক্ষে সুধা মূর্তির উপস্থিতি আমাদের ‘নারী শক্তি’র ক্ষেত্রে শক্তিশালী পদক্ষেপ। সাংসদ হিসাবে তাঁর সময়কালের জন্য অভিনন্দন জানাই।’’
রাজ্যসভায় তাঁকে সাংসদ হিসাবে মনোনীত করায় খুশি সুধা। সংবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘আমি খুব খুশ। সেই সঙ্গে আমি এটা অনুভব করছি যে আমাকে আরও বেশি দায়িত্ব দেওয়া হল। আমি আমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। ব্যক্তিগত ভাবে আমি খুশি কারণ গরীবদের জন্য কাজ করার জন্য অনেক বড় প্ল্যাটফর্ম পেয়েছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এটা আমার কাছে নতুন জিনিস। এই বিষয়টি নিয়ে আমাকে পড়াশোনা করতে হবে।’’
সুধা আরও যোগ করেন, ‘‘আমি মনে করি না যে আমি এক জন রাজনীতিবিদ। আমি এক জন মনোনীত রাজ্যসভার সাংসদ। আমার জামাইয়ের (ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক) রাজনৈতিক পরিসরের সঙ্গে আমার রাজনৈতিক পরিসরের সম্পূর্ণ ভিন্ন।’’
সমাজসেবা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে ইনফোসিসের কর্তা নারায়ণ মূর্তির স্ত্রী সুধা শিক্ষাবিদ, বিশিষ্ট লেখিকা হিসাবে পরিচিত। তিনি যে রাজনীতিতে যোগ দিতে পারেন সেই জল্পনা চলছিলই। নারী দিবসে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা সেই জল্পনাই সত্যি করল। দিন কয়েক আগেই সুধা আচমকাই হাজির হয়েছিলেন নয়া সংসদ ভবনে। শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীনই নয়া সংসদ ভবন দেখতে এসেছিলেন তিনি।
১৯৫০ সালে ১৯ অগস্ট কর্নাটকে জন্মগ্রহণ করেন সুধা। তিনি নিজে এক জন ইঞ্জিনিয়ার। নারায়ণ মূর্তির স্ত্রী তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন ‘টাটা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লোকোমোটিভ কোম্পানি’তে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে তিনি কাজ করেছেন। শুধু তা-ই নয়, বেঙ্গালুরুর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসাবেও কাজ করেছেন সুধা। কন্নড়, মারাঠি, ইংরেজি-সহ বিভিন্ন ভাষায় তাঁর ৪০টির বেশিও বই আছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে একাধিক কলম লিখেছেন তিনি।
২০০৬ সালে সুধাকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়। ২০২৩ সালে তিনি পান পদ্মভূষণ সম্মান। ইনফোসিস কর্তা নারায়ণ মূর্তিকে বিয়ে করেন সুধা। তাঁদের দুই সন্তান অক্ষতা এবং রোহনও নিজের নিজের জীবনে প্রতিষ্ঠিত। অক্ষতার বিয়ে হয় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকের সঙ্গে।