ছবি পিটিআই।
খ্রিস্টান রাজ্য নাগাল্যান্ডে বড়দিনের উৎসবে পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য কয়লা খনিতে উদয়াস্ত খেটে অর্থ রোজগার করা ১৩ যুবক আপাতত কবরে শায়িত। মায়েদের চোখের জলকে সাক্ষী রেখে গণহত্যার সাত দিন ব্যাপী শোক পালন শেষ হল।
আশা ছিল, কেন্দ্র ও নাগা সংগঠনগুলির মধ্যে শান্তি আলোচনার পর্ব মিটে যাবে বড়দিনের আগেই। কিন্তু সেনা কমান্ডোদের এলোপাথাড়ি গুলিচালনার জেরে শান্তি আলোচনা আপাতত বিশ বাঁও জলে। বরং কমান্ডোদের গুলিতে নিহত নিরীহ গ্রামবাসীদের মায়েদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ। সপ্তাহব্যাপী শোক পালন শেষ হলেও তাই আধা সেনা ও সেনার গতিবিধির উপরে নিষেধাজ্ঞা তুলল না নাগাল্যান্ডের মন জেলার কনিয়াক জনগোষ্ঠী। বরং নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সম্পূর্ণ অসহযোগিতার ডাক দিয়েছে তারা। মনে বড়দিনের সব উৎসব, বনভোজন, ভোজসভা ও সব বিনোদনের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।
সেনার গুলিতে নিহতদের পরিবারের জন্য পাঠানো সরকারি ক্ষতিপূরণের প্রথম কিস্তির টাকা আগেই ফিরিয়ে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। এ বার কনিয়াকদের সব সংগঠন একজোট হয়ে ঘোষণা করল, যত দিন না নাগাল্যান্ড থেকে সশস্ত্র বাহিনীগুলির বিশেষ ক্ষমতা আইন তথা আফস্পা প্রত্যাহার করা হচ্ছে, সেখানে নিরাপত্তাবাহিনীর টহলদারি চলবে না। মন জেলায় আর সেনায় নিয়োগের প্রক্রিয়া চালানো যাবে না। কোনও কনিয়াক তরুণ সেনায় যোগদানের পরীক্ষায় অংশ নেবেন না। শিবির তৈরি বা অন্য যে কোনও কাজে মনের যে সব স্থানীয় গ্রামবাসী জমি দিয়েছেন নিরাপত্তাবাহিনীকে তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হল, অবিলম্বে সব লিজ় বাতিল করতে হবে। অর্থাৎ জেলায় নিরাপত্তাবাহিনীর কোনও ঘাঁটিই থাকা চলবে না। জানানো হল, ভারতীয় সেনার সঙ্গে জনতার সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে। এমনকি সেনার তরফে কোনও গ্রাম পরিষদ, ছাত্র সংগঠনকে দেওয়া উন্নয়ন প্রকল্প বাবদ সাহায্য গ্রহণ করা হবে না। সেনা বা সরকারের তরফে দেওয়া সব ধরনের প্যাকেজ ও সাহায্যও ফিরিয়ে দেবেন কনিয়াকরা। কনিয়াক এলাকাগুলিতে সব গাড়ি, দফতর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে কালো পতাকা উড়তেই থাকবে।