লাদাখ সীমান্তে টহল দিচ্ছে সেনা। ফাইল চিত্র।
লাদাখ নিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হল মোদী সরকারকে। লাদাখের নেতারা কেন্দ্রের গড়ে দেওয়া কমিটিতে যোগ দিতে রাজি হলেন না তো বটেই, একই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের ঠকিয়েছে। তাঁদের দাবি, লাদাখ যত দিন জম্মু ও কাশ্মীরের অংশ ছিল, তত দিন তাঁরাও ভাল ছিলেন। লাদাখ সীমান্তে চিন যখন চোখ রাঙাচ্ছে, তখন এই ঘটনা স্বভাবতই অস্বস্তি বাড়িয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে সম্প্রতি লাদাখের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে ছিলেন দেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই, লাদাখের সাংসদ এবং লাদাখের স্বশাসিত পরিষদের প্রতিনিধিরা। কিন্তু এই পরিষদের নেতারাই কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে রাজি হননি।
লাদাখের ‘বুদ্ধিস্ট অ্যাসোসিয়েশনে’র সহ সভাপতি এবং লাদাখের স্বশাসিত পরিষদের নেতা চেরিং দোর্জায়ের কথায়, “জম্মু ও কাশ্মীরের অংশ হিসেবেই আমরা ভাল ছিলাম।” একই সঙ্গে তাঁর দাবি, লাদাখের মানুষদের বোকা বানানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রসঙ্গত, লাদাখের নেতারা দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রের কাছে লাদাখকে স্বতন্ত্র রাজ্য কিংবা সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এই নিয়ে আলোচনা করার জন্যই কমিটি গঠন করার কথা জানায়। কিন্তু লাদাখের বিক্ষুব্ধ নেতাদের মতে, তাঁদের দাবি পূরণ না হলে এই আলোচনা করা বৃথা। তাঁদের যুক্তি চাকরি, ব্যবসায় লাদাখবাসীকে সুযোগ করে দিতে হলে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে লাদাখকে অন্তর্ভুক্ত করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই।
২০১৯ সালের অগস্ট মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা নিয়ে রাজ্যটিকে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ, এই দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করার কথা জানান। কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়, এত দিন অবহেলিত থাকা লাদাখেও এ বার উন্নয়ন হবে। কিন্তু লাদাখের নেতাদের দাবি, তারপর তাদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। কার্গিলে ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের নেতা সাজাদ হুসেনও দোর্জায়ের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “পাকিস্তান গিলগিট বালটিস্তানের মানুষদের সঙ্গে যে আচরণ করে, কেন্দ্রীয় সরকার যেন আমাদের সঙ্গে তেমন আচরণ না করে।”