—ফাইল চিত্র।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হল শিয়ালদহ আদালতে। আগামী ১৮ জানুয়ারি, শনিবার দুপুরে সাজা ঘোষণা করা হবে।
গত ১১ নভেম্বর আরজি করের ঘটনায় বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। টানা দু’মাস ধরে তা চলল। এই মামলায় আগেই চার্জশিট দিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেখানে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকেই একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিল। আদালতে তাঁর সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
সিবিআইয়ের দাবির বিরোধিতা করে আদালতে ধৃতের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, তাঁর মক্কেল এই ঘটনার সঙ্গে যুক্তই নন। গোটা ঘটনাটি সাজানো। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে তাঁর মক্কেলকে। বুধবারই আদালতে ধৃতের আইনজীবী জানান, নির্যাতিতার শরীরে কোনও ধস্তাধস্তির চিহ্ন মেলেনি। তাঁর পোশাকও অক্ষত ছিল। ফলে সিবিআই যা বলছে, তা সঠিক নয়। সিবিআইয়ের দেওয়া তথ্যপ্রমাণও পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি করেন অভিযুক্তের আইনজীবী।
সিবিআই জানিয়েছে, এই ঘটনার তদন্তে যে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ মিলেছে, তাতে এক জনই অভিযুক্ত। এক জনের পক্ষেও যে ওই ঘটনা সম্ভব, তা বলা হয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের রিপোর্টেও। সেই তথ্যপ্রমাণ উল্লেখ করেই ধৃতের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
নির্যাতিতার পরিবার আদালতে জানিয়েছে, এক জনের পক্ষে এই ঘটনা সম্ভব নয় বলে তারা মনে করে। নতুন করে আরও বিশদে তদন্ত হোক, চান নির্যাতিতার বাবা-মা। সব পক্ষের বক্তব্য শুনেছে আদালত। ধৃতের আইনজীবীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার নিজেদের অবস্থান জানায় সিবিআই। শিয়ালদহ আদালতে রুদ্ধদ্বার কক্ষে এই বিচারপ্রক্রিয়া চলেছে।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সেমিনার হল থেকে ওই মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তিনি সেই রাতে হাসপাতালে ডিউটিতে ছিলেন। ধৃত সিভিককে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ওই সেমিনার হলে ঢুকতে এবং বেরোতে দেখা গিয়েছে। কলকাতা পুলিশ ঘটনার পরের দিন তাঁকে গ্রেফতার করে। পরে এর তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে বিচার চেয়ে প্রথম দিন থেকে পথে নেমেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। চিকিৎসা ব্যবস্থায় পরিবর্তনের দাবিও তোলেন তাঁরা। একাধিক বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বৈঠক হয়। বৃহস্পতিবার আরজি করের ঘটনার পাঁচ মাস পূর্ণ হয়েছে। সেই উপলক্ষে পথে নেমেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। কলেজ স্ট্রিট থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিল চলছে। সিবিআইয়ের তদন্তে তাঁরাও অনাস্থা প্রকাশ করেছেন।