গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বা অনুচ্ছেদ ৩৭০ প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে দায়ের করা সবক’টি মামলা নিয়ে বুধবার থেকে ধারাবাহিক শুনানি শুরু হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে। এই আবহে শনিবার ‘কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল’ হিসাবে ঘোষণার চার বছর অতিক্রম করার দিনেও ঘরবন্দি রইল কাশ্মীর উপত্যকা।
‘আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা’ হিসাবে শনিবার প্রশাসন গৃহবন্দি করেছে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি-সহ একাধিক রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীকে। পিডিপি নেত্রী মেহবুবা টুইটারে তাঁকে আটক এবং গৃহবন্দি করার কথা জানিয়েছেন। লিখেছেন, ‘‘আজ আমাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। পিডিপির অনেক নেতা-কর্মীকে বেআইনি ভাবে থানায় আটক করা হয়েছে। অথচ ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক’ বলে ভারত সরকার ধারাবাহিক ভাবে সুপ্রিম কোর্টে অসত্য তথ্য জানাচ্ছে।’’
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ জানিয়েছে, বিনা অনুমতিতে পিডিপি নেতা-কর্মীরা মিছিল করার পরিকল্পনা করেছিলেন। সে ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে আঁচ পেয়েই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। বস্তুত, পুলিশ-আধাসেনা-সেনার ঘেরাটোপেই ৫ অগস্ট কেটেছে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের। রাজধানী শ্রীনগর-সহ উপত্যকার সর্বত্র রয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নজরদারি। নিরাপত্তার কারণে আমজনতাকে ঘরের বাইরে বেরোতেও নিষেধ করা হয়। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা যাতে কোনও রকম নাশকতা চালাতে না পারে, তার জন্য কার্যত দুর্গের নিরাপত্তায় মুড়ে দেওয়া হয়েছিল শ্রীনগরকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট রাজ্যসভায় জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা দানকারী ৩৭০ নম্বর ধারা প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জানিয়েছিলেন, এ সংক্রান্ত নির্দেশনামায় সই করেছেন রাষ্ট্রপতি। এর পরে সংসদের দুই কক্ষে ৩৭০ বাতিলের বিল পাশের ফলে বিশেষ মর্যাদা হারায় কাশ্মীর। এমনকি, হারায় রাজ্যের মর্যাদাও। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে ভেঙে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ— দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করা হয়। সেই সিদ্ধান্তকে ‘অসাংবিধানিক’ দাবি করে শীর্ষ আদালতে মামলা এখন বিচারাধীন।