জম্মু ও কাশ্মীরের হামলার মুখে পুণ্যার্থীদের বাস। ছবি: পিটিআই।
বাসের চালক গুলি খেয়েছেন। খাদে গড়িয়ে পড়েছে বাস। যাত্রীরা গুলিবিদ্ধ। তবু গুলি চালিয়ে যাচ্ছে জঙ্গিরা। কিছুতেই থামছে না হামলা। যেন যাত্রীদের সকলকে না মেরে থামবে না বলেই পণ করেছে সকলে। জম্মু ও কাশ্মীরে পুণ্যার্থীদের বাসে হামলার ঘটনার এ ভাবেই বিবরণ দিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। হামলার সময়ে তাঁরা বাসের ভিতরেই ছিলেন। জানিয়েছেন, জঙ্গিরা গুলি চালানো থামাচ্ছে না দেখে তাঁরা অনেকেই মরার মতো ভান করে পড়েছিলেন। যাতে সকলের মৃত্যু হয়েছে বুঝে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায় হামলাকারীরা। অন্তত ২০ মিনিট ধরে বাস লক্ষ্য করে টানা গুলি চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।
জম্মু ও কাশ্মীরের হামলায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৩০-এর বেশি। বাসে মহিলা এবং শিশুরাও ছিলেন। তাঁদেরও আঘাত লেগেছে। রবিবার রইসির দিক থেকে জম্মুর কাটরার বৈষ্ণো দেবী মন্দিরের দিকে যাচ্ছিল পুণ্যার্থীদের ওই বাস। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ তাতে হামলা হয়।
অভিযোগ, বাসটিকে চার দিক থেকে ঘিরে ফেলেছিল জঙ্গিরা। ছয় থেকে সাত জন মিলে বাস লক্ষ্য করে টানা গুলি চালাতে থাকে। চালক গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর নিয়ন্ত্রণ হারান। যাত্রীদের নিয়ে বাসটি পাশের খাদে গড়িয়ে পড়ে যায়। যাত্রীদের মধ্যে যাঁরা বেঁচে গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এক জন বলেন, ‘‘আমরা মরার পর চুপ করে পড়ে ছিলাম। যাতে ওরা ভাবে আমরা মরে গিয়েছি এবং গুলি চালানো বন্ধ করে। বৈষ্ণো দেবী থেকে বাসে ওঠার ৩০ মিনিটের মধ্যে হামলা হয়। আমরা খুব ভয় পেয়েছিলাম। শুধু মনে হচ্ছিল, কখন বাড়ি ফিরব! হামলার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর স্থানীয় বাসিন্দা এবং পুলিশকর্মীরা আমাদের উদ্ধার করতে আসেন।’’
আরও এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘আমি এক জন জঙ্গিকে দেখতে পাচ্ছিলাম। গুলি চালাতে চালাতে সে বাসের দিকে এগিয়ে আসছিল। সকলকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা ছিল ওদের। বাস খাদে পড়ে যাওয়ার ২০ মিনিট পরেও সে গুলি চালানো থামায়নি।’’
বৈষ্ণো দেবী মন্দিরে যাওয়ার পথে এই হামলার দায় ইতিমধ্যে স্বীকার করেছে লস্কর-ই-তৈবার শাখা সংগঠন। জঙ্গিদের খোঁজে কাশ্মীরে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-কে তদন্তের ভার দেওয়া হতে পারে।