—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। সন্তান রয়েছে স্ত্রীর কাছেই। কিন্তু ছেলের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারছেন না। এমনই অভিযোগ জানিয়ে ত্রিপুরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন এক যুবক। ওই যুবকের সঙ্গে তাঁর সন্তানের নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার জন্য পদক্ষেপ করল আদালত। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘‘শিশুর জীবনে তার বাবা-মা অতিথি হতে পারেন না। অল্প কিছু ক্ষণ ছেলে বা মেয়ের সঙ্গে কথা বলা বা সময় কাটানো ওই শিশুটির জন্য যথেষ্ট নয়।’’ তার পর ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে শিশুর সঙ্গে বাবার নিয়মিত যোগাযোগ করে দেওয়ার নির্দেশ দিল হাই কোর্ট।
সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি হচ্ছিল বিচারপতি অমরনাথ গৌঢ়ের এজলাসে। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, বাবা-মায়ের আইনি ঝামেলার জন্য তাদের ভালবাসা, স্নেহ থেকে শিশুটিকে বঞ্চিত হতে দেওয়া যায় না। তাই সন্তান রাখার অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া বাবাকে তাঁর অধিকার দিতে হবে। তার পরেই আদালত জানায়, সন্তানের সঙ্গে কথাবার্তা বলা, তার সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য ভিডিয়ো কলের সাহায্য নিতে পারেন বাবা। আদালত বলে, “শুধু একটা নির্দিষ্ট সময় দেখা করতে দেওয়ার অনুমতি নয়, শিশুর সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য বাবা বা মাকে সময় দেওয়া উচিত। যদি ভিন্রাজ্যে কোনও স্বামী-স্ত্রী থাকেন এবং সন্তান তাঁদের কারও এক জনের কাছে থাকে, সে ক্ষেত্রে ই-মেল, টেলিফোন কিংবা ভিডিয়ো কলে যোগাযোগ করা যেতে পারে। সন্তান রাখার আইনি অধিকার হয়তো শুধু মা পেয়েছেন। সে ক্ষেত্রে প্রতি দিনই ৫ থেকে ১০ মিনিট সন্তানের সঙ্গে ফোন বা ভিডিয়ো কলে কথা বলতে পারেন বাবা। এর মাধ্যমে শিশু এবং বাবা-মায়ের মধ্যে বন্ধন দৃঢ় হয়। সন্তানের জীবনে তো বাবা-মা অতিথি নয়।”
বিবাহবিচ্ছেদ প্রসঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ, বাবা-মায়ের আইনি লড়াইয়ে সবচেয়ে প্রভাবিত হয় সন্তান। তার মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গভীর প্রভাব পড়ে। ওই সময়ে সন্তানের সঙ্গে বাবা-মা, দু’জনেরই বেশি করে সময় কাটানো উচিত। তা ছাড়া, এ সব মামলার ক্ষেত্রে স্বামী এবং স্ত্রী একে অপরকে ‘ভিলেন’ হিসাবে দেখাতে চান। সেটার প্রভাব শিশুর উপর পড়তে দেওয়া যায় না।