উদ্ধার করা হচ্ছে যুবককে। —নিজস্ব চিত্র।
স্ত্রীর সঙ্গে মোটেই বনিবনা হচ্ছিল না। গত কয়েক দিন ধরে অশান্তি চরমে উঠেছিল। তাই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন যুবক। ভাবতে ভাবতে নিজের তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে তিনি পৌঁছে যান বহরমপুরে গঙ্গায়। ভাগীরথী সেতু থেকে ঝাঁপ দেন। বুধবার গভীর রাতে এই ঘটনায় জোর চাঞ্চল্য ছড়ায়। তবে দু’জনকেই সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা গিয়েছে। কিন্তু বেঁচে গিয়ে আক্ষেপ যাচ্ছে না ওই যুবকের। বলছেন, ‘‘কথা রাখা হল না।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার রাত ৯টা নাগাদ তিন বছরের শিশুকে কোলে নিয়ে বহরমপুর রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী সেতু থেকে ঝাঁপ দেন রহমান শেখ নামে এক ব্যক্তি। তবে বরাতজোরে বাবা, ছেলে— দু’জনেই বেঁচে যান। ওই ঘটনার সময় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের একটি দল সেতু সংলগ্ন কলেজ ঘাট এলাকায় ছিল। ফলে সঙ্গে সঙ্গে তারা বাবা এবং তাঁর সন্তানকে উদ্ধার করে। চিকিৎসার জন্য দু’জনকেই তড়িঘড়ি মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন দু’জনেই স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন।
কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন? রহমান জানাচ্ছেন, অশান্তির জন্য। তিনি জানান, সংসারের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়েও মনোমালিন্য হচ্ছিল স্ত্রীর সঙ্গে। বুধবার রাতে অশান্তি চরমে পৌঁছোয়। স্ত্রী তাঁকে মরতে বলেন। তিনিও স্ত্রীর ‘কথায়’ এই নিত্যদিনের অশান্তি থেকে মুক্তি পেতে ছেলেকে নিয়ে ভাগীরথীর সেতুতে চলে যান। তার পর ঝাঁপ।
কোনও ক্রমে প্রাণে বেঁচে রহমান জানান, তিনি বাঁচতে চান না। হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘বৌ বলল, ‘মরতে পারো না?’ তাই মনের দুঃখে ছেলেকে কোলে নিয়ে গঙ্গায় চলে আসি। সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলাম। কপাল খারাপ। তাই বৌয়ের কাছে দেওয়া কথা রাখা হল না।’’
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। চলছে রহমানের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা।