২০২৩ সালের জুন মাসে ওড়িশার বাহানাগায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা। —ফাইল চিত্র।
ওড়িশায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এখনও আবছা হয়নি সাধারণ মানুষের মন থেকে। ওই দুর্ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছিল সিবিআই। মঙ্গলবার ওই মামলায় ধৃত তিন জনকে জামিন দিল ওড়িশা হাই কোর্ট। করমণ্ডল দুর্ঘটনার পর কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ওই তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। গত বছরের ৭ জুলাই তাঁরা গ্রেফতার হয়েছিলেন। প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিনের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
গত বছরের জুন মাসে বালেশ্বরের কাছে বাহানাগায় তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছিল। শালিমার থেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস, বেঙ্গালুরু থেকে হাওড়াগামী সুপারফাস্ট এবং একটি মালগাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। বাহানাগার দুর্ঘটনায় অন্তত ২৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিলেন ১২০০-র বেশি মানুষ। যাত্রীসুরক্ষা নিয়ে প্রশ্নের মাঝেই তদন্তভার গিয়েছিল সিবিআইয়ের হাতে।
গত বছরের ৭ জুলাই মহম্মদ আমির খান, অরুণকুমার মোহান্ত এবং পাপ্পু যাদবকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। তাঁদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। এঁদের মধ্যে মোহান্ত বালেশ্বরে রেলের সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়র-ইন-চার্জ হিসাবে কর্মরত ছিলেন। বালেশ্বরের কাছে সোরো স্টেশনে সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়র হিসাবে কর্মরত ছিলেন আমির। পাপ্পুও কর্মরত ছিলেন রেলের সিগন্যাল এবং টেলি যোগাযোগ বিভাগে। ওড়িশা হাই কোর্টের বিচারপতি আদিত্যকুমার মহাপাত্রের বেঞ্চ মঙ্গলবার তিন জনকেই জামিন দিয়েছে। ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ড ছাড়াও জামিনের জন্য ছ’টি শর্ত দিয়েছে আদালত। তার মধ্যে একটি শর্তে রেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যে ডিভিশনে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল, ওই ডিভিশনে অভিযুক্তদের কাজ করানো যাবে না।
উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বরেই করমণ্ডল দুর্ঘটনার তদন্তে ভুবনেশ্বরের বিশেষ আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছিল সিবিআই। ওই সময়ে রেল সূত্রে জানা গিয়েছিল, চার্জশিটে সিবিআই উল্লেখ করেছে, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার দিনে ওড়িশার বাহানাগা বাজার স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ৯৪ নম্বর রেল গেটে মেরামতির কাজ করছিলেন অভিযুক্তেরা। ওই ক্রসিংয়ে ‘বুম বার’ বসানোর সময় সিগন্যালিং ব্যবস্থার সার্কিট বদল করেছিলেন অভিযুক্তেরা। তাঁরা দুর্ঘটনাস্থলের কাছে ৭৯ নম্বর রেল গেটের সার্কিট দেখে কাজ করছিলেন বলেই খবর। কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পরে পুরো ব্যবস্থার কার্যকারিতা পরীক্ষা না করেই তাঁরা ট্রেন চলাচল শুরু করে দেন বলেও জানিয়েছিলেন তদন্তকারীরা।