— প্রতীকী চিত্র।
জামিন দেওয়ার সময় সমস্ত কিছু বিবেচনা করে নির্দেশ দেওয়া উচিত। জামিনের নির্দেশের ছ’মাস পরে অভিযুক্তকে জামিনের জন্য বন্ড জমা দিতে বলতে পারে না আদালত। সম্প্রতি এক মামলার শুনানিতে এই মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চে বিহারের মদ নিষিদ্ধকরণ আইনে এক অভিযুক্তের মামলার শুনানি চলছিল গত সপ্তাহে। সেখানেই এই মন্তব্য করেছে দুই বিচারপতির বেঞ্চ।
অভিযুক্তের গাড়ি থেকে ৪০ লিটার দেশি মদ উদ্ধার করেছিল বিহার পুলিশ। বিহারে মদ্যপান নিষিদ্ধ থাকার কারণে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বিহারের এক নিম্ন আদালতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা চলছিল। ওই মামলায় ইতিমধ্যে অভিযুক্তকে জামিনের নির্দেশ দিয়েছে পটনা হাই কোর্ট। কিন্তু শর্ত হিসাবে বলা হয়েছিল, ৬ মাস পরে জামিনের জন্য বন্ড জমা দিতে হবে। ফলে নিম্ন আদালত থেকে জামিন পেতে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তাই হাই কোর্টের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিযুক্ত। গত সপ্তাহে ওই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, কাউকে জামিন দেওয়া যায় কি না, তা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত আদালতের। হয় জামিনের আর্জি মঞ্জুর করা হবে, কিংবা তা খারিজ করা হবে। কিন্তু জামিনের নির্দেশ দেওয়ার ছ’মাস পর জামিনের জন্য বন্ড জমা দিতে বলা যায় না।
দুই বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, “সম্প্রতি হাই কোর্ট থেকে এমন বেশ কিছু নির্দেশ আমাদের নজরে এসেছে। যেখানে জামিনের আর্জির গুরুত্ব সঠিক ভাবে বিবেচনা না করেই তা মঞ্জুর হয়ে গিয়েছে। শর্ত হিসাবে অভিযুক্তদের ছ’মাস পরে জামিনের জন্য বন্ড জমা দিতে বলা হচ্ছে।” এর ফলে যে জামিনের প্রক্রিয়াও ছ’মাস পিছিয়ে যাচ্ছে— সে কথাও উল্লেখ করেছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, কোনও অভিযুক্তকে জামিনের নির্দেশ দেওয়ার সময় এই ধরনের শর্ত আরোপ করা উচিত নয়।
অতীতেও পটনা হাই কোর্টের একটি জামিনের নির্দেশ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল। হাই কোর্ট জানিয়েছিল, নির্দেশনামা জারির ৬ মাস পরে অভিযুক্তের জামিন কার্যকর হবে। তা নিয়ে মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। গত সেপ্টেম্বর মাসে শীর্ষ আদালত অভিযুক্তের পক্ষেই মত দিয়েছিল। বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাশির বেঞ্চ জানিয়েছিল, আদালত যদি এক বার মনে করে অভিযুক্ত জামিন পাওয়ার যোগ্য, তবে তাঁর জেলমুক্তিকে আটকে রাখা যায় না।