প্রতীকী ছবি।
এক ক্লিকেই বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে নানা রকম স্টাইলিশ ছুরি। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে ছত্তীসগঢ়ের পুলিশ প্রশাসন। কেননা এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গত এক বছরে অনলাইনে এ রকম ছুরির চাহিদা ক্রমেই বেড়ছে রাজধানী রাইপুরে। এক বছরে ২৮০টি ছুরির হামলা, ৫৬টি খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় ঘুম উড়ে গিয়েছে পুলিশের। অনলাইনে ছুরি কেনা, আর ছুরি নিয়ে হামলা— এই দু’টি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র খুঁজতে গিয়ে পুলিশের চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, যে সব হামলার ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে তার বেশির ভাগই সামান্য সামান্য কারণ নিয়ে। কখনও ১০০-২০০ টাকার জন্য হামলা, তো কখনও আবার সামান্য কথা কাটাকাটি নিয়ে। যে বিষয়টি পুলিশকে সবচেয়ে বেশি চিন্তায় ফেলেছে তা হল, রাজধানীতে যত হামলার ঘটনা ঘটেছে তার ৬০ শতাংশ ঘটনায় অভিযুক্তদের অপরাধের কোনও রেকর্ডই নেই। ৯০ শতাংশ হামলার ঘটনার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে যার পিছনে কোনও বড় কারণই নেই। এক একটি ছুরির হামলার ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করতেই পুলিশ চমকে উঠেছে। তদন্তে দেখা গিয়েছে যে সব ছুরির হামলা ঘটেছে সেই ছুরি অনালইনেই কেনা হয়েছে।
আরও চমকে দেওয়ার মতো যে বিষয় তা হল, কোনও কোনও ক্ষেত্রে ৫০ বা ১০০ টাকার জন্যও ছুরি দিয়ে হামলা চালানোর ঘটনা ঘটেছে। রাইপুরের ভনপুরীতে শুক্রবার এক ব্যবসায়ীর গলায় ছুরি চালিয়ে দেয় এক যুবক। সামান্য ঘটনা নিয়ে বচসা। তার পরই হামলা। তার ঠিক আগের দিন পাশের ভিআইপি রোড এলাকায় ১৮০ টাকা লুঠের ঘটনায় এক সাইকেল আরোহীর উপর ছুরি নিয়ে হামলা চালানো হয়। কোভিড পরিস্থিতি এবং লকডাউনে এই ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসনের একাংশ।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের জেরা করার সময় দেখা গিয়েছে বেশির ভাগই ছুরি কেনা হয়েছে অনলাইন থেকে। এর পরই পুলিশ অনলাইন সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে কবে, কখন এবং কোন এলাকায় ছুরির অর্ডার দেওয়া হয়েছে তার একটা তালিকা চেয়ে পাঠায়। কয়েকটি সংস্থা দিলেও, বেশ কিছু সংস্থা সেই তালিকা পুলিশের হাতে তুলে দিতে চায়নি।
সেই তালিকা দেখেই পুলিশ সংশ্লিষ্ট ক্রেতাকে থানায় ডেকে পাঠায়। দেখা যায়, অনলাইনে যাঁরা ছুরি কিনেছেন তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই কিশোর। ইতিমধ্যেই ৬৯৭ জন কিশোর বিভিন্ন থানায় এসে চুরি জমা করেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।