গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কার্গিল বিজয় দিবসের কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর সরকারের অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতা করায় বিরোধীদের সমালোচনা করেছিলেন। তাঁর সেই মন্তব্যের জবাবে পাল্টা সুর চড়াল কংগ্রেস।
শুক্রবার কার্গিলের অদূরে দ্রাসে যুদ্ধ স্মারক (ওয়ার মেমোরিয়াল) পরিদর্শনের পরে আয়োজিত সভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে মোদী বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যবশত, জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়কে কিছু মানুষ রাজনীতির বিষয় বানিয়েছেন। সেনাবাহিনীর এই সংস্কার নিয়েও কেউ কেউ তাঁদের ব্যক্তিগত স্বার্থে মিথ্যার রাজনীতি করছেন।’’ ভারতীয় সেনার গড় বয়স কমানোর লক্ষ্যেই তাঁর সরকারের এই পদক্ষেপ বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।
পাশাপাশি, দ্রাসের ওই সভায় ব্যয়সঙ্কোচের উদ্দেশে অগ্নিপথ প্রকল্প চালু করার অভিযোগ খারিজ করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘কিছু লোক এমন ভুল ধারণাও ছড়াচ্ছেন যে সরকার পেনশনের টাকা বাঁচাতে এই স্কিম নিয়ে এসেছে। আমি এমন লোকদের জিজ্ঞাসা করতে চাই, আজকের নিয়োগকারীদের জন্য পেনশনের প্রশ্ন ৩০ বছর পরে উঠবে। সরকার কেন এখনই সিদ্ধান্ত নেবে?’’
কার্গিল বিজয় দিবস কর্মসূচিতে মোদীর মন্তব্যের পরে কংগ্রেস সাংসদ কার্তি চিদম্বরম বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলছেন যে আমরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছি। তিনি ৩০ বছর পরে কী হবে, তা নিয়ে কথা বলছেন। এই অগ্নিবীরদের চার বছর পরে কী হবে তা নিয়ে তাঁর কথা বলা উচিত।’’ প্রসঙ্গত, সেনায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য ২০২২ সালের জুন মাসে ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। জানিয়েছিলেন, ওই প্রকল্পে সাড়ে ১৭ থেকে ২৩ বছরের তরুণ-তরুণীরা চার বছরের জন্য চুক্তির ভিত্তিতে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখায় (স্থল, নৌ এবং বায়ুসেনা) যোগ দিতে পারবেন। তাঁদের বলা হবে ‘অগ্নিবীর’।
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, মাসে ৩০-৪৫ হাজার টাকা করে পান অগ্নিবীরেরা। সেনায় শূন্যপদ ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চতুর্থ বছরের শেষে সেই ব্যাচের সর্বাধিক ২৫ শতাংশ অগ্নিবীরকে সেনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বাকিদের ১১-১২ লক্ষ টাকা হাতে দিয়ে পাঠানো হবে অবসরে। থাকবে না কোনও পেনশন। সেনার স্থায়ী নিয়োগের পদ্ধতি বদলে চুক্তিভিত্তিক করার প্রতিবাদে সে সময় দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভে নেমেছিলেন চাকরিপ্রার্থী যুবকেরা। লোকসভা ভোটের প্রচারে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, ‘‘মোদী দুই ধরনের সেনা তৈরি করতে চাইছেন। প্রথমটি, দলিত, আদিবাসী, অনগ্রসর, অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল শ্রেণি এবং সংখ্যালঘুদের সন্তানদের নিয়ে। অন্যটি গঠিত হবে সচ্ছল পরিবারের প্রতিনিধিদের নিয়ে।’’ তাঁর ওই মন্তব্য নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিল বিজেপি।