কারনালে কৃষকদের উপরে লাঠিচার্জের প্রতিবাদে বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। রবিবার পাতিয়ালায়। পিটিআই ছবি: পিটিআই
কারনালে প্রতিবাদী কৃষকদের উপর লাঠিচার্জের ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমশ বাড়ছে। পরিস্থিতি যে কোনও সময় অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠতে পারে, তার ইঙ্গিত দিতে শুরু করেছেন কৃষক নেতারা। গত কাল পুলিশের লাঠিচার্জে আহত এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতির পর্যালোচনা করতে আজ মন্ত্রী ও পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। কৃষক সংগঠনগুলির যুক্ত মঞ্চ সংযুক্ত কিসান মোর্চা(এসকেএম) আজ জানিয়েছে, দিল্লি সীমানায় কেন্দ্রীয় কৃষি বিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভের ১০ মাস পূর্তি উপলক্ষে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর সারা ভারত সাধারণ ধর্মঘটের ডাক
দেওয়া হয়েছে।
বিজেপি শাসিত হরিয়ানার কারনালে বস্তারা টোল প্লাজ়ার কাছে জাতীয় সড়ক অবরোধকারী কৃষকদের উপরে গত কাল লাঠিচার্জ করে পুলিশ। কৃষক নেতাদের অভিযোগ, লাঠিচার্জে বহু কৃষক আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আজ এক জন মারা গিয়েছেন। নিহত কৃষকের নাম সুশীল কাজল। তিনি রামপুরের জাতন গ্রামের বাসিন্দা। শিরোমণি অকালি দলের নেতা মনজেন্দ্র সিংহ সিরসা টুইটারে লিখেছেন, ‘ওই এসডিএমের নির্দেশে পুলিশ সুশীল কাজলকে মেরেছে। তাঁর মাথায় বার বার আঘাত
করেছে পুলিশ’।
কারনালের এসডিএম আয়ুষ সিংহের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনিই পুলিশকে লাঠিচার্জের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘একটা লোকও যেন আমার কাছে আসতে না পারে। যদি বা পৌঁছয়, তার মাথা যেন ফাটিয়ে দেওয়া হয়।’’ ওই আধিকারিকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের তোড়জোড় শুরু করেছে আন্দোলনরত কৃষকদের আইনি সেল। আয়ুষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়েছে তারা। কৃষক মৃত্যুর ঘটনায় সারা ভারত কিসান সভা দাবি করেছে, লাঠিচার্জ ও কৃষক মৃত্যুর বিচারবিভাগীয় তদন্ত হোক। ওই আইএএস অফিসার কার নির্দেশ এমন কাজ করলেন তা প্রকাশ্যে আসা উচিত।
কৃষক মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ আরও তীব্র করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কৃষক নেতারা। এসকেএম নেতা দর্শন পাল সিংহ আজ জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই দিল্লি ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হবে। বিজেপিকে
নিশানা করে ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকায়েত বলেন, ‘‘আপনারা আমাদের খলিস্তানি বলেন, আপনারা তো তালিবান। আমরা গত কাল একটি সরকারি তালিবানকে চিহ্নিত করেছি। তিনি হরিয়ানা সরকারের এক অফিসার (আয়ুষ সিংহ)।’’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে কৃষক নেতা যোগীন্দ্র সিংহ উগরাহার কটাক্ষ, ‘‘উনি বলেন মধ্যস্বত্বভোগী দূর করবেন। উনিই তো সবচেয়ে বড় মধ্যস্বত্বভোগী।’’
আগামী দিনে কৃষক বিক্ষোভের উত্তাপ যে আরও বাড়বে, তা ভালই বুঝতে পারছে রাজ্য সরকার। আজ মন্ত্রী ও আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী খট্টর। সূত্রের খবর, পরিস্থিতি কী ভাবে সামাল দেওয়া হবে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।