ওড়িশার উপমুখ্যমন্ত্রী পার্বতী পরিদা। ছবি: সংগৃহীত।
‘সবই প্রভুর ইচ্ছা’ না সেবায়েতদের দায়িত্বজ্ঞানহীন গাফিলতি— জল্পনা চলছে গোটা ওড়িশা জুড়েই। গুণ্ডিচা মন্দিরে ঢোকার সময়ে বলভদ্রের মূর্তির পতন কার দোষে— খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গড়ে দিয়েছে উৎকল প্রশাসন। কিন্তু এরই মধ্যে সদ্য ওড়িশায় ক্ষমতায় আসা বিজেপি সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী পার্বতী পরিদার মন্তব্য নিয়ে ভক্তদের একাংশ রীতিমতো ক্ষুব্ধ।
বিগ্রহ-পতনের প্রসঙ্গে উপমুখ্যমন্ত্রী পার্বতী— ‘সবই প্রভুর ইচ্ছা’, শব্দবন্ধটি ব্যবহার করেছেন। এমনিতে জগন্নাথদেবের মন্দির সংক্রান্ত যে কোনও বিষয়ে হামেশাই এটুকু বলে থাকেন ভক্তজন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পার্বতীর মন্তব্যটি অনেকেই দায় এড়ানোর চেষ্টা বলে মনে করছেন। তবে রাজ্য প্রশাসনের একাংশই বোঝাচ্ছে, ওড়িশা সরকার গুণ্ডিচা মন্দিরে শ্রীবিগ্রহের পহুণ্ডির সময়ে ‘গাফিলতি’ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাই তদন্ত কমিটিও গড়া হয়েছে।
পুরী জেলার এডিএম, মন্দিরের ডেভেলপমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর এবং ডিএসপি পর্যায়ের এক পুলিশ আধিকারিককে কমিটিতে রাখা হয়েছে। তবে প্রাথমিক ভাবে যা জানা যাচ্ছে, বলভদ্রের পহুণ্ডির সময়ে তাঁর বিগ্রহ পিছনে টানার একটি দড়ি ঠিকঠাক বাঁধা হয়নি। তাতেই ঘটে বিপত্তি। প্রায় ৭ ফুটের উচ্চতা থেকে নীচে হুমড়ি খেয়ে মূর্তিটি পড়ে যায়। নীচে চাপা পড়ে আহত হন ১২ জন দয়িতাপতি সেবায়েত।
এই দড়ি না-বাঁধার ত্রুটি ভয়ানক গাফিলতি বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। ভুবনেশ্বরের প্রবীণ জগন্নাথ-গবেষক সুরেন্দ্রনাথ দাস ওই সন্ধ্যায় পুরীতে ছিলেন। তিনি বলছেন, ‘‘শ্রীবিগ্রহ এক ফুট এগিয়ে, এক ফুট পিছিয়ে ধীরে নীচে নামাতে হয়। দয়িতাপতিরা কম বয়সি, অনভিজ্ঞ মনে হল। তদন্ত হওয়াই উচিত।’’
তবে আহত দয়িতাপতিদের মধ্যে ১১ জনই সুস্থ হয়ে মন্দিরের সেবাকাজে যোগ দিয়েছেন। নূতন দাস মহাপাত্র বলে এক জন পায়ে চোট পেয়েছেন। তাঁর বাড়িতে চিকিৎসা চলছে। অন্য দিকে, শ্রী মন্দিরের রত্নভান্ডার খোলার বিষয়ে দু’-এক দিনেই রাজ্য সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। সরকার নিযুক্ত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি ১৪ জুলাই রত্নভান্ডার খুলতে চায়। তা বাহুড়া যাত্রা বা উল্টোরথের আগের দিন। তখন হাজারো অনুষ্ঠানের মধ্যে সময়টা অনুকূল কি না, অনেকেরই সংশয় রয়েছে।