ছবি: পিটিআই।
মুম্বই বিমানবন্দরে একটি ৪২৩ আসনের বিমান তৈরি রেখেছে এয়ার ইন্ডিয়া। বিদেশ মন্ত্রক ও স্বাস্থ্য মন্ত্রকের থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলেই সেই বিমান পাড়ি দেবে চিনের উহান শহরে। সেখানে আটক আড়াইশোরও বেশি ভারতীয়কে ‘উদ্ধার’ করে আনতে। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে ‘তালাবন্দি’ করে রাখা হয়েছে চিনের যে ১৩টি শহর, তার একদম প্রথমেই রয়েছে উহানের নাম। নতুন ধরনের করোনাভাইরাসে সংক্রমণ শুরু হয় হুবেই প্রদেশের এই শহরেই।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার আজ একটি টুইটে জানিয়েছেন, চিনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালানো হচ্ছে, কী ভাবে উহান থেকে ভারতীয়দের উদ্ধার করা যায়। তালাবন্দি শহরটিতে বিমানবন্দর, ট্রেন স্টেশন, বাস টার্মিনাল সব কিছুই বন্ধ। ফলে একটি বিদেশি বিমানকে সেখানে গিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের নিয়ে আসতে গেলে বিশেষ অনুমতি নিতেই হবে। উহান থেকে ফেরত আনার পরে এই ভারতীয়দের ১৪ দিন নজরদারিতে রাখা হবে। চিনের বাকি শহরের থাকা ভারতীয়দের সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছে বেজিংয়ের ভারতীয় দূতাবাস, জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবাও জানিয়েছেন, চিনের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। তবে ভারতে চিনের রাষ্ট্রদূত সান ওয়াইডং জানিয়েছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) সুপারিশ করে যে, একটি ‘তালাবন্দি’ শহর থেকে বাসিন্দাদের অন্য কোথাও সরিয়ে না নিয়ে যাওয়াই ভাল। তাঁর কথায়, ‘‘সংক্রমণ মোকাবিলায় চিন যে ভাবে পদক্ষেপ করছে, তাতে কোনও দেশেরই চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই।’’
এ দিনই পুণেতে শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন চিন-ফেরত এক ব্যক্তি। সোমবার রাতে তাঁকে নায়ডু হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে এই আশঙ্কায় মহারাষ্ট্রে ছ’জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চার জন মুম্বইয়ে, দু’জন পুণেতে। প্রায় ৪৫০ জন চিন-ফেরত ব্যক্তিকে বিভিন্ন শহরে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই কেরলের বাসিন্দা। মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় উহান থেকে সম্প্রতি আসা এক মহিলা ও তাঁর ছেলেকেও। হরিয়ানাতেও হাসপাতালে ভর্তি এখ জন। সোমবার দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তিন জনকে। কর্মসূত্রে তাঁরা নিয়মিত চিনে যান। গতকাল, সোমবার পর্যন্ত চিন থেকে ভারতের বিভিন্ন বিমানবন্দরে আসা ১৫৫টি উড়ানের মোট ৩৩৫৫২ যাত্রীকে বিমানবন্দরে ‘স্ক্রিনিং’ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২০ জন যাত্রীর রক্ত ও থুতুর নমুনা পুণের ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছিল। ২০টিই নমুনাতেই করোনাভাইরাস মেলেনি। সারা দেশ জুড়ে মোট ২০টি বিমানবন্দরে ‘স্ক্রিনিং’ চলছে।