Sikkim

টানা বৃষ্টি, একাধিক ধস, বিচ্ছিন্ন উত্তর সিকিম, যৌথ অভিযানে সেনা-বায়ুসেনা

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, সেনা ও বায়ুসেনার উদ্ধারকারী দল যৌথ ভাবে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। বিপন্ন এলাকাগুলি থেকে হেলিকপ্টারে করে পর্যটক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিরাপদ এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৮:৫২
Share:

ধসে বিধ্বস্ত সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থা। ছবি: সংগৃহীত।

একনাগাড়ে বৃষ্টির জেরে বড়সড় বিপর্যয়ের মুখে উত্তর সিকিম। বিভিন্ন এলাকায় ধস নেমে দেশের বাকি অংশের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পাহাড়ি রাজ্যের উত্তরাংশ। কোথাও কোথাও জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে সেতুও। সেবকের কাছে ধস নামায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। সেনা এবং বায়ুসেনা যৌথ ভাবে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। উত্তর সিকিমে আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার করে আনা হচ্ছে আকাশপথে।

Advertisement

টানা তিন দিন ধরে একটানা বৃষ্টি চলছে সিকিমে। বৃষ্টি চলছে বাংলার পাহাড়েও। বৃষ্টির জেরেই সেবকের কাছে তিস্তার দু’ধারের রাস্তায় ধস নেমে দার্জিলিং, কালিম্পং, ডুয়ার্স এবং সিকিম যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আপৎকালীন ভিত্তিতে সে রাস্তা পরিষ্কার করার কাজ শুরু হয়। আটকে পড়া পর্যটকদের এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেককে আবার ধসে বিপর্যস্ত রাস্তার উপর দিয়ে হাঁটিয়ে পার করে আনেন উদ্ধারকারীরা।

তবে সিকিমের পরিস্থিতি অনেক বেশি ভয়াবহ। সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, সে রাজ্যে একটানা বৃষ্টিতে ধস তো হয়েইছে। জলের তোড়ে অনেক এলাকায় রাস্তা ধুয়ে গিয়েছে, ভেসে গিয়েছে সেতু। ফলে উত্তর সিকিমের নানা প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় বহু মানুষ আটকে পড়েছেন।

Advertisement

শুধু পর্যটকরা আটকে পড়েছিলেন, তা নয়। উত্তর সিকিমের বিভিন্ন এলাকা যে ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, তাতে খাবার, জল, ওষুধ এবং অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরবরাহও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই স্থানীয় বাসিন্দারাও বিপদে ছিলেন।

উদ্ধারকাজে নেমেছে সেনা ও বায়ুসেনা। ছবি: সংগৃহীত।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সামরিক সাহায্য চায় স্থানীয় প্রশাসন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, সেনা ও বায়ুসেনার উদ্ধারকারী দল যৌথ ভাবে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। বিপন্ন এলাকাগুলি থেকে হেলিকপ্টারে করে পর্যটক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিরাপদ এলাকায়। পর্যটকদের মূলত নামিয়ে আনা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সেবকে। আর উত্তর সিকিমের স্থানীয় বাসিন্দাদের আপাতত গ্যাংটকে সরানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: কারও চোখে ত্রাস, কোথাও রবিনহুড এই হিদমা

বিচ্ছিন্ন এলাকায় খাবার, জল, ওষুধ এবং অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রীও আপাতত পৌঁছচ্ছে সেনা ও বায়ুসেনার কপ্টারেই। পাঠানো হয়েছে তাঁবু, কম্বল এবং অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীও। যাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, কপ্টারে তোলার আগে তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্যাংটকে, সেবকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে সেনা সূত্রের খবর।

আরও পড়ুন: মূল অভিযুক্তেরা অধরা, হরিয়ানা গণধর্ষণকাণ্ডে গ্রেফতার টিউবওয়েল মালিক

সেবক এবং গ্যাংটক থেকেই সামরিক কপ্টারগুলি যাচ্ছে বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলিতে। ইতিমধ্যেই অন্তত ১০০ বার যাতায়াত করেছে কপ্টারগুলি। জানিয়েছে সেনা। তবে উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে বলে সেনা সূত্রের খবর। কোনও এলাকায় পৌঁছনো বাকি থেকে গেল কি না, কোথাও কেউ আটকে রয়েছেন কি না, আকাশপথে খতিয়ে দেখা হচ্ছে সে সব। তবে বৃষ্টি এখনও থামেনি। ফলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বিপন্ন এলাকা থেকে তাই যত বেশি সম্ভব লোকজনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শিশু, মহিলা ও বয়স্ক নাগরিকদের আগে সরানো হচ্ছে। এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকেও আকাশপথে উদ্ধার করা হয়েছে বলে সেনা জানিয়েছে।

(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement