সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
সাধারণ ভাবে কারও জামিন আটকে রাখা উচিত নয়, মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের। আর্থিক তছরুপ সংক্রান্ত এক মামলায় অভিযুক্তের জামিনের আর্জির শুনানি ছিল শীর্ষ আদালতে। সেই মামলার শুনানি চলাকালীনই এই মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এ এস ওকা এবং বিচারপতি এ জি মাসির বেঞ্চ। আদালত জানিয়েছে, একমাত্র অস্বাভাবিক বা বিশেষ কোনও মামলাতেই হাই কোর্টের জামিন আটকানো উচিত। পাশাপাশি, নিম্ন আদালত থেকে দেওয়া জামিনের নির্দেশের উপর দিল্লি হাই কোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল, সেটিও খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
উল্লেখ্য, জামিনের আবেদনকারী প্রবীন্দর সিংহ খুরানা আর্থিক তছরুপের মামলায় অভিযুক্ত। ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। প্রথমে নিম্ন আদালতে তিনি জামিন পেয়েছিলেন। পরে দিল্লি হাই কোর্টে যায় মামলা এবং সেখানে তাঁর জামিনের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে দেওয়া হয়। এই অবস্থায় তাই জামিনের আর্জি নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন ওই অভিযুক্ত। প্রায় এক বছর ধরে খুরানার জামিন আটকে রয়েছে, মামলার শুনানি চলাকালীন সে কথা শুনে বিস্মিত হয়ে যান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদ্বয়। নিম্ন আদালতে অভিযুক্ত জামিন পাওয়ার পর হাই কোর্টে যায় ইডি। তার পর গত বছরের জুন মাস থেকে খুরানার জামিন আটকে রয়েছে। শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, “পর্যাপ্ত প্রমাণ ছাড়া এক জন অভিযুক্তের জামিন এত লম্বা সময় ধরে আটকে রাখা হচ্ছে? বাইরে কী বার্তা যাচ্ছে?”
জামিন মামলার শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, স্বাধীনতাকে খর্ব করাকে কেউ অভ্যাসে পরিণত করতে পারেন না। এতে বিপর্যয় ছাড়া কিছুই হবে না। সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের কথাও তুলে ধরে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকারের বিষয়েও আলোকপাত করে সুপ্রিম কোর্ট। যদিও সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতে এই ধরনের বেশ কিছু পুরনো মামলার কথা তুলে ধরেন। ওই মামলাগুলিতে অভিযুক্তেরা বিদেশে পালিয়ে গিয়েছে বলে জানান সলিসিটর জেনারেল। তবে সেই যুক্তি গ্রহণ করেনি শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, যদি ওই ব্যক্তি কোনও সন্ত্রাসবাদের মামলায় অভিযুক্ত হতেন, তা হলে এই যুক্তি বিবেচনা করা যেত।