প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
নামব নামব করেও দেশের অর্থনৈতিক ‘মন্দা’ নিয়ে এখনও আন্দোলনে নামতে পারেনি কংগ্রেস। কিন্তু গাঁধী পরিবারের এসপিজি নিরাপত্তা তুলে দেওয়ার পরে দলের কোনও না কোনও শাখা রোজ পথে নামছে। আজও তা হয়েছে। স্লোগান উঠছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে। আর দাবি উঠছে, ফিরিয়ে দিতে হবে সনিয়া-রাহুলের এসপিজি নিরাপত্তা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের শীর্ষ সূত্র অবশ্য আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, কংগ্রেস যতই চেঁচাক, এসপিজি ফেরানো হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যেমন জেড-প্লাস নিরাপত্তা পান, গাঁধী পরিবারের সদস্যরাও পাবেন। এরই মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে আজ জানানো হল, মোদীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার গত বৈঠকেই এসপিজি আইন সংশোধনী বিল আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সামনের সপ্তাহেই সংসদে এই বিল পেশ করা হতে পারে, যেটি পাশ হলে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কেউ এসপিজি নিরাপত্তা পাবেন না। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর পরিবারের সদস্যরাও নয়।
সরকারের বক্তব্য, ১৯৮১ সাল পর্যন্ত দিল্লি পুলিশের অধীনেই ছিল প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার ভার। তার পরে তৈরি হয় স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। কিন্তু ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গাঁধী হত্যার পর নড়েচড়ে বসে রাজীব গাঁধী সরকার। একটি ‘স্পেশাল প্রোটেকশন ইউনিট’ (এসপিইউ) তৈরি হয়, যা পরে ‘স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ’ বা ‘এসপিজি’তে পরিণত হয়। প্রথমে এই এসপিজি ছিল শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্যই। ১৯৮৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হন বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহ, এক বছরের মধ্যে চন্দ্রশেখর। রাজীব গাঁধী প্রধানমন্ত্রী না থাকলেও তাঁর উপরে হামলার আশঙ্কা বাড়তে থাকে। শেষে তিনি জঙ্গিদের হাতে প্রাণ হারান। রাজীবের মৃত্যুর পরেই এসপিজি আইনে সংশোধন এনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারকে এসপিজি নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়।
কিন্তু প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের এসপিজি নিরাপত্তা গত অগস্টে সরিয়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতি সনিয়া, রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার এসপিজি-ও সরানো হয়েছে। সদ্য কালই প্রিয়ঙ্কা বলেছেন, ‘‘এসিপিজি নিরাপত্তা সরানোটা আসলে রাজনীতি।’’ কিন্তু সরকারি ‘সূত্র’ হিসেব দিচ্ছে, ৯১ সাল থেকে রাহুল ১৫৬ বার বিদেশ সফরের মধ্যে ১৪৩ বারই এসপিজি নিরাপত্তা সঙ্গে নেননি। প্রিয়ঙ্কা গিয়েছেন ৯৯ বার, নিরাপত্তা নেননি ৭৮ বার। আর সনিয়া গাঁধীও গত ৪ বছরে ২৪ বার এসপিজি ছাড়া বিদেশ গিয়েছেন। আর দেশেও এই তিন জনের বুলেটপ্রুফ গাড়ি না-নিয়ে চলার ঘটনা কয়েক হাজার।
এর পরেও কংগ্রেসের রশিদ অলভি আজ বলেন, ‘‘বিজেপি আসলে গাঁধী পরিবারকে খতম করতে চাইছে। গাঁধী পরিবারের উপর হামলার আশঙ্কা যে রয়েছে, মোদী সরকারই তা জানিয়েছে।’’ মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি বলেন, ‘‘গাঁধী পরিবার ধরেই নিয়েছে, এসপিজি নিরাপত্তা পাওয়াটা তাঁদের অধিকার। হামলার আশঙ্কা আঁচ করে প্রোটোকল মেনে নিরাপত্তার মূল্যায়ন হয়। এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই।’’