ফাইল ছবি
ঘরবাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টি আইন মেনে হওয়া উচিত, কখনওই তা যেন প্রতিশোধের অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা না হয়— আজ উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনকে সতর্ক করে এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট।
সাম্প্রতিক কালে সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীই হোক বা সন্দেহভাজন অপরাধী, প্রশাসন বুলডোজ়ার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে তাঁদের বাড়িঘর। সর্বত্রই বলা হচ্ছে, দখলদার উচ্ছেদ অভিযান চলছে। তাৎপর্যপূর্ণ হল যে, সেই এলাকাতেই এমন ধ্বংসলীলা চালানো হয়েছে, যেখানে বিজেপি-বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে বা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাস।
এই ঘটনায় সংখ্যালঘুদের সংগঠন জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। তাদের অভিযোগ, বেআইনি ভাবে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় যাঁরা দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের আর্জিও জানায় আবেদনকারী সংগঠনটি। তাদের বক্তব্য, আদালত উত্তরপ্রদেশ সরকারকে নির্দেশ দিক, যাতে বেআইনি ভাবে এমন ধ্বংসলীলা চালানো না হয়। সপ্তাহান্তে ফের বুলডোজ়ার হামলার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে জমিয়তে।
ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালত উত্তরপ্রদেশের সরকার, প্রয়াগরাজ ও কানপুর পুরসভাকে নোটিস জারি করে মঙ্গলবারের মধ্যে তাদের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছে। এর পাশাপাশ আদালত স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, ঘরবাড়ি ধ্বংসের বিষয়টি আইন মেনে করা হোক, নিছক প্রতিশোধের বশে নয়। যদিও বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়ার রুখতে কোনও নির্দেশ জারি করেনি আদালত।
পয়গম্বর সম্পর্কে নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে গত শুক্রবার ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল উত্তরপ্রদেশে। বিক্ষোভকারীদের চিহ্নিত কিংবা গ্রেফতার করার পরে কানপুর, সহারণপুর, প্রয়াগরাজে তাঁদের ঘরবাড়ি বুলডোজ়ার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ভিডিয়ো ফুটেজ ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। জমিয়তের তরফে ওই ঘটনাকে ‘সাংঘাতিক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের বক্তব্য, অসাংবিধানিক ভাবে গোটা বিষয়টি করা হয়েছে। শুধুমাত্র একটি সম্প্রদায়কে নিশানা করে। তাদের বক্তব্য, কোনও ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলার ক্ষেত্রে অম্তত ১৫-৪০ দিনের আগাম নোটিস দেওয়া আবশ্যিক।
যদিও উত্তরপ্রদেশ সরকার আদালতে দাবি করেছে, আইন মেনেই সবটা করা হয়েছে। কোর্টে তারা জানিয়েছে, আইন মেনেই সবটা করা হয়েছে। কোনও সম্প্রদায়কে নিশানা করা হয়নি। প্রয়াগরাজ, কানপুরের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নোটিস দেওয়া হয়েছিল। দাবি করা হয়, ভুল ধারণা ও রাজনীতির বশবর্তী হয়েই এই মামলায় আবেদন জানানো হয়েছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।