উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। গত সপ্তাহেই বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদেরা একজোট হয়ে ধনখড়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন রাজ্যসভায়। কিন্তু অনাস্থা প্রস্তাবে ‘ত্রুটি’র কারণে সেটি বৃহস্পতিবার খারিজ করে দিয়েছেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান তথা জেডিইউ সাংসদ হরিবংশ নারায়ণ সিংহ। উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে ধনখড়কে অপসারিত করার জন্য আনা এই অনাস্থা প্রস্তাবে ‘প্রচুর ত্রুটি’ রয়েছে বলে মনে করছেন রাজ্যসভায় ধনখড়ের ডেপুটি। তা ছাড়া ধনখড়ের ‘সম্মান নষ্টের অভিপ্রায়ে’ তাড়াহুড়ো করে এই অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে বলে মনে করছেন ডেপুটি চেয়ারম্যান।
উপরাষ্ট্রপতির পদ হল দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ। তিনিই সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার অধিবেশন পরিচালনা করেন। সংবাদমাধ্যমের একাংশ জানিয়েছে, নিয়ম অনুসারে এই ধরনের অনাস্থা প্রস্তাব আনার ক্ষেত্রে ১৪ দিনের নোটিস দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। সেই কারণে হরিবংশ রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন। পাশাপাশি ধনখড়ের নামের বানানও সঠিক ভাবে লেখা হয়নি বলে দাবি করা হচ্ছে।
গত ১০ ডিসেম্বর রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদেরা। কংগ্রেস, তৃণমূল, আম আদমি পার্টি, সমাজবাদী পার্টি-সহ ‘ইন্ডিয়া’র সব শরিক দল ঐক্যবদ্ধ ভাবে ওই প্রস্তাব জমা দেয়। বিরোধী শিবিরের ৬০ জন সাংসদ সই করেন ওই অনাস্থা প্রস্তাবে। সেটি তাঁরা জমা দেন রাজ্যসভার সচিবালয়ে।
তবে এই অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে অপসারণ করানো যে বিরোধীদের পক্ষে সহজ হবে না, শুরু থেকেই তার আভাস পাওয়া গিয়েছিল। নিয়ম অনুসারে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের অপসারণের জন্য অনাস্থা প্রস্তাবটি প্রথমে রাজ্যসভায় পেশ করতে হবে। সেখানে সাংসদদের ভোটাভুটিতে ধনখড়ের বিরুদ্ধে সংখ্যাগরিষ্ঠের মত প্রয়োজন। তার পর সেটি লোকসভায় পেশ হবে। সেখানেও একই ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ধনখড়ের বিরুদ্ধে মত প্রয়োজন। কিন্তু সাংসদ-সংখ্যার বিচারে ‘ইন্ডিয়া’র একক ভাবে ধনখড়ের বিরুদ্ধে সংখ্যাগরিষ্ঠ মত তৈরি সম্ভব ছিল না।
রাজ্যসভার সচিব পিসি মোদী বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবটি জমা দেন ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশের কাছে। পিটিআই সূত্রের খবর, ধনখড়কে অপসারণের প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখার পর হরিবংশ জানিয়েছেন, এই প্রস্তাবটি দেশের সাংবিধানিক পদকে ‘কলঙ্কিত’ করার চেষ্টা হয়েছে। বর্তমান উপরাষ্ট্রপতিকেও ‘অপমান’ করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।