—প্রতীকী চিত্র।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নেটমাধ্যমে নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরতেই পারেন সাধারণ মানুষ, সেখানে দমননীতি চালানো উচিত নয়। দেশে অতিমারি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করার পিছনে নরেন্দ্র মোদী সরকারের ভূমিকা নিয়ে যখন ভূরি ভূরি অভিযোগ জমা হচ্ছে ফেসবুক-টুইটারে এবং পাল্টা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সেই সব অভিযোগ আটকানোর অভিযোগ উঠছে, সেই সময় এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট।
কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে দেশ জুড়ে যে অব্যবস্থার ছবি সামনে এসেছে, তা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করেছে শীর্ষ আদালত। শুক্রবার তার শুনানি চলাকালীন নেটমাধ্যমে নাগরিকদের অভাব-অভিযোগের কথা উঠে আসে। সেখানেই আদালত সাফ জানিয়ে দেয় কোনও ধরনের তথ্য ধামাচাপা দেওয়াকে সমর্থন করে না এবং এই ধরনের কাজকে নীতিবিরুদ্ধ বলে মনে করে তারা। তার পরেও এই ধরনের দমন নীতি নেওয়া হলে তা আদালতের অবমাননা বলেই গণ্য হবে।
শুক্রবার আদালতে সওয়াল জবাব চলাকালীন বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘দেশের নাগরিক এবং বিচারপতি হিসেবে একটা বিষয় নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন আমি। তা হল, দেশের কোনও নাগরিক যদি নেটমাধ্যমে অভাব-অভিযোগ তুলে ধরেন, সে ক্ষেত্রে তথ্যের উপর দমন নীতি নেওয়াকে সমর্থন করি না। নাগরিকদের কথা আমাদের কানে পৌঁছতে দিন। আগামী দিনে হাসপাতালে শয্যা এবং অক্সিজেনের অভাব নিয়ে নেটমাধ্যমে মুখ খুলে কাউকে যদি হেনস্থার শিকার হতে হয়, তা আদালতের অবমাননা বলে গণ্য হবে।’’
করোনা সঙ্কটে মোদী সরকারের সমালোচনায় লেখা সাংসদ-বিধায়কদের বেশ কিছু টুইট সম্প্রতি তুলে নেয় মাইক্রো ব্লগিং সাইট কর্তৃপক্ষ। দিন কয়েক আগে করোনা সঙ্কটের দায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পদত্যাগের দাবি উঠলে, সেই সংক্রান্ত সমস্ত পোস্ট আটকে দেয় ফেসবুক। পরে যদিও ভুলবশত এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানায় তারা। নাগরিকদের একাংশ কিন্তু গোটা ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকার এবং ফেসবুকের মধ্যে আঁতাঁত খুঁজে পেয়েছেন। পরিবারের এক সদস্যের জন্য অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে না বলে টুইটারে অভিযোগ করায়, সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের এক যুবকের বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের হয়। সেই পরিস্থিতিতেই নেটমাধ্যমে নাগরিকদের মতামত দমন করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট।