নীতীশ কুমার। —ফাইল চিত্র।
রবিবার সকালেই ইস্তফা দিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। বিকেলেই বিজেপির সমর্থন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার কথা জেডিইউ প্রধানের।
তাঁর জোটবদলের জল্পনার মধ্যেই শুক্রবার রাতে প্রথম প্রকাশ্যে আসে বিহারে ক্ষমতাসীন জোট ‘মহাগঠবন্ধন’-এর অন্তর্বিরোধ। এর মধ্যেই নীতীশের একটি পুরনো ভিডিয়ো নতুন করে প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ফের তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন কি না। বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর জবাব ছিল, ‘‘প্রশ্নই ওঠে না!’’
২০২২ সালের অগস্ট মাসে শেষ বার এনডিএ ছাড়েন নীতীশ। আর ভিডিয়োটি ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের। তাতে দেখা গেছে, সাংবাদিকেরা তাঁকে প্রশ্ন করছেন, আরজেডি এবং কংগ্রেসের ‘মহাগঠবন্ধন’-এর হাত ছেড়ে আবার কি বিজেপির জোটসঙ্গী হবেন তিনি? এর উত্তরে নীতীশ জানান, ‘‘প্রশ্নই ওঠে না! মৃত্যুবরণ করব, তবু ওদের সঙ্গে জোট করব না।’’
নীতীশ যখন এ কথা বলছেন, তখন তাঁর পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। জেডিইউ সুপ্রিমো সে দিন এ কথাও স্বীকার করেছিলেন, বিজেপির সঙ্গে জোটে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল।
তিনি আরও জানিয়েছিলেন, ‘‘ওরা (বিজেপি) অনেক চেষ্টা করেছে। আমাকে দলে টানার জন্য। তেজস্বী ও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এখন আবার ওরা একই জিনিস করছে।’’
এনডিএ ছেড়ে নীতীশ ‘মহাগঠবন্ধন’-এ যোগ দেওয়ার পর বিহার বিজেপির তৎকালীন প্রধান সঞ্জয় জয়সওয়াল বলেছিলেন, নীতীশকে আর আমাদের দলের সঙ্গে প্রতারণা করার সুযোগ দেবে না গেরুয়া শিবির। তিনি বলেন, ‘‘নীতীশের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে কমছে। সেই কারণেই জেডিইউ ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে খারাপ ফল করেছিল, যেখানে আমরা আরও ভাল ফল করেছি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নির্বাচনের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতিতে অটল ছিলেন। আর নীতীশ, এক জন স্বভাবগত বিশ্বাসঘাতক, যিনি প্রধানমন্ত্রীর সেই বিশ্বাসের অপব্যবহার করেছেন।’’
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, নীতীশের জন্য বিজেপির দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু তার বছর ঘুরতে না ঘুরতেই লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই নীতীশকেই ফের এনডিএ-তে টেনে এনে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’তে ভাঙন ধরাতে মরিয়া পদ্মশিবির, যে জোট তৈরির অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন নীতীশই।
রবিবার দলীয় বৈঠকের পর সকাল সাড়ে ১১টায় বিহারের রাজ্যপাল রাজেন্দ্র অরলেকারের সঙ্গে দেখা করেন নীতীশ। তার পরেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।