বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। ফাইল চিত্র।
বিরোধী দলগুলি একজোট হয়ে কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে দেশের সব পিছিয়ে পড়া রাজ্যকে ‘বিশেষ রাজ্যের তকমা’ দেওয়া হবে বলে জানালেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। শনিবার নীতীশ সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “যদি আমরা (বিরোধী দলগুলি) সরকার গঠনের সুযোগ পাই, তবে আমরা নিশ্চয়ই পিছিয়ে পড়া রাজ্যগুলিকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেব।” এই প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে নীতীশ আরও বলেন, “আমি শুধু বিহারের কথা বলছি না। আমি বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা পেতে পারে, এমন অন্য রাজ্যগুলোর কথাও বলছি।”
সম্প্রতি দিল্লিতে গিয়ে বিরোধী দলগুলির শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আসেন একদা বিজেপির জোটসঙ্গী নীতীশ। কিছু দিন আগে বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করার পর নীতীশকে বিরোধী জোট গঠনে বিশেষ ভাবে সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছে।
অন্য দিকে ২০০৭ সাল থেকেই বিহারকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে সরব নীতীশের দল জেডি(ইউ)। বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে সরকার চালানোর সময়েও পুরনো এই দাবিটিকে উস্কে দিয়ে শরিক দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছে নীতীশের দল। আরজেডি, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এই ইস্যুতে বিজেপির উপর চাপ বাড়াতে পারেন নীতীশ।
বিধি মোতাবেক, দেশের কোনও রাজ্য যদি বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা পায়, তবে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ক্ষেত্রে কেন্দ্র ৯০ শতাংশ অর্থ সাহায্য করলে, মাত্র ১০ শতাংশ অর্থ দিতে হয় সংশ্লিষ্ট রাজ্যটিকে। বর্তমানে দেশে মোট ১১টি রাজ্য আছে, যেগুলি বিশেষ রাজ্যের তকমা পেয়েছে। এগুলি হল অরুণাচল প্রদেশ, অসম, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর (এখন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল), মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম, ত্রিপুরা এবং উত্তরাখণ্ড। সংবিধানে বিশেষ রাজ্যের কোনও সংস্থান না থাকলেও অধুনা লুপ্ত যোজনা কমিশনের নিয়ন্ত্রণাধীন জাতীয় উন্নয়ন পর্যদ সব দিক খতিয়ে দেখে রাজ্যগুলিকে বিশেষ রাজ্যের তকমা দেয়।
২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে জানিয়েছিল, দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের আধিক্য আছে এমন কোনও রাজ্যে যেখানে জনঘনত্ব কম এবং বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ আদিবাসী কিংবা সীমান্তের কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকা কোনও রাজ্যকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দিতে পারে সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি। বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশার মতো রাজ্যগুলি দীর্ঘ দিন ধরে তাদের দারিদ্র এবং অন্যান্য প্রতিকূলতাকে দেখিয়ে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা চাইলেও, তাদের আবেদন মঞ্জুর করেনি কেন্দ্রীয় সরকার।