এনআইয়ের দাবি, গত ৪ বছরে ভারতে কোটি কোটি টাকা এসেছে ‘ডি কোম্পানি’ থেকে। —ফাইল চিত্র।
আবার ভারতে সন্ত্রাসবাদী হামলার ছক কষছেন দাউদ ইব্রাহিম ও তাঁর সহযোগীরা? গত চার বছরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য ‘অনুদান’ হিসাবে ১২ থেকে ১৩ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন দাউদ। দাউদ এবং তাঁর সহকারী ছোটা শাকিলের বিরুদ্ধে জমা দেওয়া চার্জশিটে এমনই জানিয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। সংস্থার গোয়েন্দারা দাবি করেছেন, সম্প্রতি পাকিস্তান হয়ে দুবাই থেকে সুরত এবং মুম্বইয়ে হাওয়ালার টাকা এসেছে। ওই অনুদানের পিছনেও নাকি রয়েছেন দাউদ এবং তাঁর সহযোগী ছোটা শাকিল।
এনআই-এর দাবি, আপাতত পাকিস্তানের করাচিতে রয়েছেন দাউদ। ছোটা শাকিল, আরিফ আবু বকর শেখ ওরফে আরিফ ভাইজান, শাব্বির আবু বকর শেখ, মহম্মদ সেলিম কুরেশি ওরফে সেলিম ফ্রুট মিলে মুম্বই-সহ ভারতের বিভিন্ন শহরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য ‘অনুদান’ সংগ্রহ থেকে টাকা ছড়ানো শুরু করেছেন। বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাস ছড়ানোর একটি মামলায় এনআইএ তাদের চার্জশিটে জানাচ্ছে, গত এপ্রিল মাসেই আরিফের প্রভাবে হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা এসেছে মুম্বইয়ের পূর্ব মালাডে।
বস্তুত, এনআইএ-র দাবি, গত চার বছরে হাওয়ালার মাধ্যমে ভারতে ১২-১৩ কোটি টাকা পাঠিয়েছে দাউদ গোষ্ঠী। লক্ষ্য সন্ত্রাসবাদী হামলার। এই হাওয়ালা মামলায় তাঁদের কাছে মোট ছ’জন সাক্ষী আছেন বলে দাবি করেছে এনআইএ। তাঁদের মধ্যে এক জন সাক্ষী সুরতের। নিরাপত্তার কারণে তাঁর পরিচয় গোপন রাখছেন গোয়েন্দারা। চার্জশিটে এনআইএ জানিয়েছে দাউদ, ছোটা শাকিল, সেলিম, শাবির দুবাই থেকে ভারতে সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য টাকা পাঠিয়েছেন। তাঁদের তিন জনের নামই চার্জশিটে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। ভারত থেকেও হাওয়ালার মাধ্যমে কালো টাকা বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছে যাচ্ছে। ওই সমস্ত অর্থই সন্ত্রাসবাদী কাজে ‘অনুদান’ হিসাবে কাজে লাগানোর লক্ষ্য বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৩ সালে মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে অভিযুক্ত দাউদের মাথার দাম গত অগস্টে ২৫ লক্ষ টাকা ধার্য করেছে এনআইএ। এর আগে ২০০৩ সালে দাউদের মাথার দাম ২৫ মিলিয়ন ডলার ধার্য করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য প্রায় ২০৪ কোটি টাকা। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দাউদ এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে এনআইএ। অভিযোগ, পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এবং নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশের রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ীদের নিশানা করছে দাউদের ‘ডি কোম্পানি’।