সিয়াচেন লাগোয়া সেই এলাকা। ছবি: এক্স হ্যান্ডল থেকে নেওয়া।
পূর্ব লাদাখের পরে এ বার সিয়াচেন। পাক অধিকৃত ভারতীয় ভূখণ্ডে শাক্সগাম এলাকায় (সামরিক পরিভাষায় ট্রান্স কারাকোরাম ট্র্যাক্ট) সড়ক এবং সুড়ঙ্গপথ নির্মাণের চিনা কর্মকাণ্ড এ বার প্রকাশ্যে এল। ম্যাক্সার টেকনোলজির প্রকাশিত নতুন উপগ্রহচিত্রে দেখা গিয়েছে, সেখানে স্থায়ী নির্মাণ চালাচ্ছে চিনা পিললস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)।
১৯৪৮ সালেই জম্মু ও কাশ্মীরের ওই এলাকা দখল করেছিল পাক সেনা। ষাটের দশকে সিয়াচেন হিমবাহের পূর্বপ্রান্তের শাক্সগাম এলাকা বেজিংয়ের হাতে তুলে দিয়েছিল ইসলামাবাদ। গত কয়েক বছর ধরেই পূর্ব লাদাখ, উত্তরাখণ্ড, সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) এমনকি, ভারতীয় ভূখণ্ডের অন্দরে নির্মাণের কাজ চালানো এমনকি, গ্রাম বানানোর অভিযোগ উঠেছে চিনা ফৌজের বিরুদ্ধে। এ বার তার নজির মিলল সিয়াচেন এলাকাতেও।
বছর কয়েক আগে প্যাংগং হ্রদের উত্তর এবং দক্ষিণ তীর জুড়ে চিনা ফৌজের সেতু নির্মাণের ‘তৎপরতা’ দেখা গিয়েছিল উপগ্রহচিত্রে। এর পরে ম্যাক্সার প্রকাশিত উপগ্রহচিত্র দেখিয়েছিল, এলএলসি লাগোয়া আকসাই চিন এলাকায় চিন সেনা স্থায়ী বাঙ্কার এবং বড় সুড়ঙ্গ তৈরি করছে। ভবিষ্যতে সংঘাতের পরিস্থিতির মোকাবিলার লক্ষ্যে শি জিনপিংয়ের সেনার এই পদক্ষেপ বলে ধারণা ভারতের।
ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে সেনার পাশাপাশি ভারী অস্ত্রশস্ত্র এবং বিপুল পরিমাণ রসদ মজুত রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে বলেই ২০২৩-এর জুলাই-অগস্টে তোলা উপগ্রহচিত্র বিশ্লেষণ করে মনে করছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ঘটনাচক্রে, সিয়াচেনের উপগ্রহচিত্রগুলিও সেই সময়ই তোলা।
পশ্চিম চিনের শিনজিয়াং প্রদেশের কাশগড় থেকে দক্ষিণ পাকিস্তানের গ্বদর বন্দর পর্যস্ত বিস্তৃত কারাকোরাম হাইওয়ে (যার পোশাকি নাম— চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর বা সিপিইসি) গিয়েছে শাক্সগাম উপত্যকার অদূর থেকেই। ১৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ‘বাই লেন’ মহাসড়ক চিনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ কর্মসূচির অন্যতম প্রধান অঙ্গ। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দ্রুত সেনা এবং সামরিক সরঞ্জাম পরিবহণের উদ্দেশ্যেই শাক্সগাম থেকে সিপিইসি সংযোগকারী রাস্তা বানাচ্ছে চিনা ফৌজ। যা ভারতের পক্ষে উদ্বেগজনক।