— ফাইল চিত্র।
অষ্টাদশ লোকসভার সাত দফা ভোটের দ্বিতীয় পর্ব শুক্রবার। দেশের ১৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে ভোট হবে ৮৮টি আসনে। এই তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, রায়গঞ্জ এবং বালুরঘাটও।
দফার ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়া-সহ এক ঝাঁক তারকা প্রার্থী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যেরও ‘ভাগ্যপরীক্ষা’ হবে এই দফার ভোটে।
রাহুল তাঁর পুরনো আসন, কেরলের ওয়েনাড় থেকে এ বারও ভোটে লড়ছেন। সেখানে তাঁর মূল লড়াই বাম জোট এলডিএফের সিপিআই প্রার্থী অ্যানি রাজার বিরুদ্ধে। তিনি সিপিআই সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার স্ত্রী। রয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রনও। কেরল থেকে কংগ্রেসের টিকিটে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী তারুর (তিরুঅনন্তপুরম) এবং এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কেসি বেণুগোপাল (আলাপুঝা) ভোটে লড়ছেন। সিপিএমের উল্লেখযোগ্য প্রার্থী দুই প্রাক্তন মন্ত্রী কেকে শৈলজা এবং টমাস আইজ্যাক (পথনমথিট্টা)।
সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য এ বিজয়রাঘবনও প্রার্থী পালাক্কাড় আসনে। কেরল থেকেই ভোটযুদ্ধে রয়েছেন বিজেপির দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী— রাজীব চন্দ্রশেখর (তিরুঅনন্তপুরম) এবং ভি মুরলীধরন (অত্তিনগল)। মোদী মন্ত্রিসভার সদস্য গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত তাঁর পুরনো আসন রাজস্থানের জোধপুর থেকেই আবার ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। ওই রাজ্যের কোটা থেকে বিজেপি প্রার্থী, বিদায়ী লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। অন্য দিকে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের ছেলে বৈভব (জালোর) এবং একদা পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক সিপি জোশী মরুরাজ্যে কংগ্রেসের উল্লেখযোগ্য প্রার্থী।
দ্বিতীয় দফার ভোটের লড়াইয়ে দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, কর্নাটকের এইচডি কুমারস্বামী (মান্ড্য) এবং ছত্তীসগঢ়ের ভূপেশ বঘেল (রাজনন্দগাঁও) রয়েছেন। কুমারস্বামী জেডিএস এবং ভূপেশ কংগ্রেসের প্রার্থী। উত্তরপ্রদেশ থেকে বিজেপির টিকিটে লড়ছেন দুই অভিনেতা হেমা মালিনী (মথুরা) এবং অরুণ গোভিল (মিরাট)। হেমা মথুরার দু’বারের সাংসদ। আশির দশকে টিভি সিরিয়াল রামায়ণে রামের ভূমিকায় অভিনয়কারী অরুণ এ বার প্রথম নির্বাচনী ময়দানে।
কর্নাটকে বিজেপি যুবনেতা তেজস্বী সূর্য (বেঙ্গালুরু দক্ষিণ) এবং উপমুখ্যমন্ত্রী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমারের ভাই সুরেশেরও জনতার দরবার ভাগ্যপরীক্ষা হবে শুক্রবার। ২০১৯-এর ভোটে মহারাষ্ট্রের অমরাবতী কেন্দ্রে কংগ্রেস-এনসিপি জোটের সমর্থনে জেতা অভিনেত্রী নবনীত কউর রানা এ বার ওই আসনে বিজেপির প্রার্থী। কংগ্রেস-এনসিপি (শরদ)-শিবসেনা (ইউবিটি) নিয়ে গঠিত বিরোধী জোট ‘মহাবিকাশ অঘাড়ী’র সঙ্গে আসন সমঝোতা না হওয়ায় বিআর অম্বেডকরের নাতি তথা বঞ্চিত বহুজন অঘাড়ীর নেতা প্রকাশ অকোলা কেন্দ্রে একক ভাবে ভোটে লড়ছেন।
বিহার আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের ‘মহাগঠবন্ধন’ প্রার্থী না করা বাহুবলী প্রাক্তন সাংসদ পাপ্পু যাদব পূর্ণিয়ায় লড়ছেন নির্দল হিসাবে। ত্রিপুরার এ বার রাজ পরিবারের সন্তান প্রদ্যোতকিশোর দেববর্মণের দল তিপ্রা মথার সঙ্গে জোট গড়েছে বিজেপি। দ্বিতীয় দফায় পূর্ব ত্রিপুরা আসনে ‘পদ্ম’ প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন প্রদ্যোতের বোন কীর্তি সিংহ দেববর্মা।
শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় কেরলের ২০টি লোকসভা আসনের সবগুলিতে ভোটগ্রহণ হবে। তা ছাড়া কর্নাটকের ১৪, রাজস্থানের ১৩, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের আটটি করে, বিহার ও অসমের পাঁচটি করে লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে এই তালিকায়। রয়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ত্রিপুরা এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের একটি করে লোকসভা আসনও।
উত্তর-পূর্বের হিংসাদীর্ণ মণিপুরের লোকসভা কেন্দ্র আউটার মণিপুরকে ভাগ করে দু’দফায় ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গত ১৯ এপ্রিল প্রথম দফায় ওই লোকসভা কেন্দ্রের একাংশে ভোটগ্রহণ হয়েছিল। বাকি অংশে হবে শুক্রবার। দ্বিতীয় দফায় মধ্যপ্রদেশের আটটি লোকসভা আসনে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও বিএসপি প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে সেখানকার বেতুল কেন্দ্রে ভোট তৃতীয় দফায় (৭ মে) হবে।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এই ৮৮টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৫২টিতে জিতেছিল বিজেপি। কংগ্রেস মাত্র ১৮টিতে। এ ছাড়া জেডিইউ এবং অবিভক্ত শিবসেনা চারটি করে, আইইউএমএল দু’টিতে, বিএসপি, সিপিএম, আরএসপি, কেরল কংগ্রেস, জেডিএস প্রার্থী একটি করে কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল প্রথম দফায় ভোট হয়েছিল দেশের ২১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০২টি লোকসভা কেন্দ্রে।