গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর সঙ্গে তাঁর বাবার সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়ে নানা ‘তথ্য’ রয়েছে ইতিহাসে। সুভাষচন্দ্র বসুর কন্যা অনিতা বসু পাফ নিজেও সে কথা জানালেন এ বার। সেই সঙ্গেই বুধবার একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘গাঁধীজি এবং নেতাজি দু’জনেই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান নায়ক। একে অপরের সাহায্য ছাড়া তাঁদের কাজ সম্পূর্ণ হত না।’’
সম্প্রতি বিজেপি ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত দাবি করেন, জওহরলাল নেহরু এবং গাঁধী না কি সুভাষচন্দ্রকে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন। পাশাপাশি, আদর্শগত দিক থেকে এক সঙ্গে গাঁধী এবং সুভাষচন্দ্রের অনুসারি হওয়া সম্ভব নয় জানিয়ে কঙ্গনা বলেন, ‘‘দু’জনের মধ্যে এক জনকে বেছে নিতে হবে।’’ পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত অভিনেত্রীর এমন মন্তব্যকে অবশ্য ‘পুরোপুরি একপেশে’ বলেছেন অনিতা। তাঁর মন্তব্য, ‘‘গাঁধীজি স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিতে বহু মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। নেতাজিকেও।’’
তবে গাঁধী এবং সুভাষচন্দ্রের ‘দুরত্বের’ কথাও এসেছে অনিতার বক্তব্যে। তিনি বলেছেন, ‘‘গাঁধীজি জানতেন, তিনি নেতাজিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। অন্য দিকে, বাবা ছিলেন গাঁধীজির ভক্ত।’’
স্বাধীনতা সংগ্রামের দুই নায়কের অবদান প্রসঙ্গে নেতাজি-কন্যা বলেন, ‘‘কংগ্রেসের কিছু নেতা দীর্ঘ দিন ধরে দাবি করেছেন, কেবল মাত্র অহিংসা আন্দোলনের পথেই ভারতের স্বাধীনতা এসেছে। কিন্তু আমরা সকলে জানি, স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে নেতাজি এবং আইএনএ (আজাদ হিন্দ ফৌজ)-রও গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল।’’
পদ্মশ্রী-প্রাপক কঙ্গনা একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘১৯৪৭ সালে পাওয়া স্বাধীনতা আসলে স্বাধীনতা নয়। ছিল ভিক্ষা। স্বাধীনতা তো ২০১৪ সালে এসেছে।’’ নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্ব প্রাপ্তির সাল হিসেবেই তিনি ২০১৪-কে চিহ্নিত করেন। কঙ্গনার ‘ভিক্ষায় পাওয়া স্বাধীনতা’ মন্তব্য আসলে একপেশে চিন্তার ফসল বলেই মনে করেন অনিতা।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের আগে একটি সাক্ষাৎকারে অনিতা বলেছিলেন, ‘‘‘‘আমার বাবা সব ধর্মের মানুষ, সব ভারতীয়কে সঙ্গে নিয়ে দেশপ্রেমের আদর্শ মেলে ধরেছিলেন। বিজেপি-র মধ্যে ধর্মীয় সহিষ্ণুতার আদর্শের ঘাটতি আমার বাবার আদর্শের সঙ্গে মেলে না।’’