Pt. Jawaharlal Nehru

নেহরু সংগ্রহশালার নাম বদলে বিতর্ক, স্বৈরতন্ত্র আর পরিবারতন্ত্র নিয়ে বিজেপি-কংগ্রেস দ্বৈরথ

নেহরু স্মৃতি সংগ্রহশালা এবং গ্রন্থাগারের নাম বদলে করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী সংগ্রহশালা এবং গ্রন্থাগার। নামবদল ঘিরে নতুন করে রাজনৈতিক উত্তাপ তৈরি হয়েছে বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৩ ২০:৪২
Share:

নেহরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম এবং গ্রন্থাগারের নাম বদল ঘিরে তুঙ্গে চাপান-উতোর। — ফাইল ছবি।

রাতারাতি নাম বদলে গেল নেহরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম এবং লাইব্রেরি সোসাইটির (এনএমএমএল)। শুক্রবার থেকে ভারত সরকারের অধীন এই স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানটি পরিচিত হবে কেবলমাত্র প্রধানমন্ত্রী সংগ্রহশালা এবং গ্রন্থাগার সোসাইটি (প্রাইম মিনিস্টার মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরি সোসাইটি) নামে। এই সিদ্ধান্ত জানাজানি হতেই কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর।

Advertisement

নাম বদলের সিদ্ধান্তের কথা জানতে পেরে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে অভিযোগ করেন, বিজেপি ইতিহাসকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু কেন? তারও জবাব দিয়েছেন খড়্গে। তাঁর মতে, বিজেপির নিজের কোনও ইতিহাস নেই। তাই ইতিহাস মোছাতেই তাদের আনন্দ। কংগ্রেস সভাপতির টুইট, ‘‘এতে বিজেপি-আরএসএসের নিম্নস্তরের মানসিকতা এবং স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবই ফুটে উঠেছে। কিন্তু নেহরু সংগ্রহশালার নাম বদলে দিয়ে আধুনিক ভারতের রূপকার এবং গণতন্ত্রের অভিভাবক পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুকে খাটো করা যাবে না।’’

পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি বিজেপিও। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘কংগ্রেস রাজনৈতিক বদহজমে ভুগছে! একটা সহজ সত্য কিছুতেই ওদের হজম হচ্ছে না যে, একটি পরিবার বাদ দিয়ে অন্যদেরও দেশ গঠনে ভূমিকা ছিল।’’

Advertisement

বৃহস্পতিবার এনএমএমএল-এর বিশেষ বৈঠকে প্রতিষ্ঠানের নামবদলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তিনি ওই সোসাইটির সহ-সভাপতি। শুক্রবার বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। এই সোসাইটির চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২৯ জন সদস্যের মধ্যে রয়েছেন অমিত শাহ, নির্মলা সীতারামন, ধর্মেন্দ্র প্রধান, জি কিষাণ রেড্ডি, অনুরাগ ঠাকুরের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা।

১৯২৯-৩০ সালে দিল্লিতে তৈরি হয় এই ভবনটি। ১৯৪৮ সালে স্বাধীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর সরকারি বাসভবন হয়ে ওঠে তিন মূর্তি ভবন। নেহরু ১৬ বছর সেই বাড়ির বাসিন্দা ছিলেন। বস্তুত, সেই বাড়িতে থাকাকালীনই তাঁর মৃত্যু হয় ১৯৬৪ সালে। ঠিক তার পরেই সরকার সিদ্ধান্ত নেয় তিন মূর্তি ভবনে নেহরুর স্মৃতিবিজড়িত সামগ্রী রেখে তাকে একটি পুরোদস্তুর মিউজিয়ামের রূপ দেওয়া হবে। থাকবে একটি পৃথক গ্রন্থাগারও।

১৯৬৪ সালের ১৪ নভেম্বর, নেহরুর জন্মের ৭৫তম বার্ষিকীতে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রাধাকৃষ্ণণ তিন মূর্তি ভবনকে জাতির উদ্দেশে সমর্পণ করেন এবং সে দিন থেকেই যাত্রা শুরু হয় নেহরু মেমোরিয়াল মিউজিয়ামের। তার ২ বছর পর এনএমএমএল সোসাইটি তৈরি হয়। তার পর থেকে এই সোসাইটির কাঁধেই এই প্রতিষ্ঠানের দেখভালের ভার। যদিও ২০১৬ সালে মোদী এখানেই দেশের প্রধানমন্ত্রীদের উপর একটি সংগ্রহশালা তৈরিতে উদ্যোগী হন। সেই সময়ও তার বিরোধিতা করেছিল কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে বিরোধিতার কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement