গত বার বাজি মেরেছিল বিহার। এ বার রাজস্থান। সর্বভারতীয় মেডিক্যাল পরীক্ষা বা নিট (ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট)-এ প্রথম হলেন রাজস্থানের সিকর জেলার নলিন খাণ্ডেলওয়াল। পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রথম পঞ্চাশে রয়েছেন তিন জন। যাঁদের মধ্যে একাদশতম স্থানে রয়েছেন হেমন্ত খাণ্ডেলা। মেয়েদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন তেলঙ্গানার মাধুরী রেড্ডি। সর্বভারতীয় স্তরে তিনি সপ্তম স্থান অধিকার করেছেন।
চলতি বছরে ডাক্তারি পড়ার জন্য গোটা দেশ থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ ছাত্রছাত্রী ওই পরীক্ষায় বসেছিলেন। আজ ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) ফল প্রকাশ করে জানিয়েছে, পরীক্ষার্থীদের মাত্র ৫৬ শতাংশ পাশ করতে পেরেছেন।
দেশের মধ্যে প্রথম হওয়া নলিন খাণ্ডেলওয়াল ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখতেন, বাবা-মা-র মতো চিকিৎসক হতে। ঘটনাচক্রে তাঁর দাদাও এখন ডাক্তারি পড়ছেন। নলিনের বাবা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। মা স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ। দাদা মিহিত বর্তমানে জোধপুরের এসএলএমসি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র। পড়াশুনোয় ক্ষতি হবে ভেবে ১৭ বছরের নলিনের হাতে ওঠেনি স্মার্টফোন। অনুপস্থিত সোশ্যাল মিডিয়ার জগৎ থেকেও। ৭২০ নম্বরের পরীক্ষায় ৭০১ পাওয়া নলিনের মতে, এনসিইআরটি সিলেবাস তাঁকে নিটে ভাল করতে সাহায্য করেছে। নলিনের কথায়, ‘‘দ্রুত সিলেবাস শেষ করে বারবার তা ঝালিয়ে নেওয়া সাফল্যের একটি বড় কারণ।’’ দিনে বারো থেকে চোদ্দ ঘণ্টা ধরে প্রস্তুতি নেওয়া নলিন আগামী দিনে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস)-এ পড়তে চায়।
অন্য দিকে গোটা দেশে দ্বিতীয় হওয়া দিল্লির বিশ্বাসনগরের ভাবিক বনসল সময় পেলেই ইউটিউবে কমেডি শো দেখতে পছন্দ করেন। পরীক্ষার চাপ কমাতে তা সাহায্য করেছে বলেও দাবি এই মুহূর্তে মুম্বইয়ে বায়োলজি অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়া ভাবিক। তাঁর কথায়, ‘‘পাঠ্যপুস্তক আগাগোড়া পড়তে হবে। কারণ এনসিইআরটি সিলেবাস অনুযায়ী সেগুলি লেখা হয়। তাতেই সাফল্য এসেছে।’’ অন্য দিকে ছোট থেকেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন মেয়েদের মধ্যে প্রথম হওয়া তেলঙ্গানার মাধুরী রেড্ডি। তেলঙ্গানা জয়েন্ট পরীক্ষায় (ইঞ্জিনিয়ারিং-মেডিক্যাল) পঞ্চম হওয়া মাধুরী এখন অপেক্ষা করছেন এমসের প্রবেশিকা পরীক্ষার ফলাফলের। মাধুরীর বক্তব্য, ‘‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ওই ফল চলে আসবে। তার পরেই সিদ্ধান্ত নেব কোথায় পড়ব।’’
গত কয়েক বছরের মতো এ বার নিট ঘিরে সে ভাবে বিতর্ক না হলেও গত ৫ মে পরীক্ষার দিনে ওড়িশায় ঘূর্ণিঝড় ফণী আছড়ে পড়ায় সে রাজ্যে পরীক্ষার দিন পাল্টে দেন এনটিএ কর্তৃপক্ষ। ফণীর কারণে পরীক্ষা পিছোয় কর্নাটকেও। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে হাম্পি এক্সপ্রেস প্রায় ১২০ কিলোমিটার ঘুরে বেঙ্গালুরুতে পৌঁছনোয় বহু পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে সময় মতো পৌঁছতে পারেননি। তাঁদের কথা ভেবে ওই রাজ্যে পরীক্ষা হয় ২০ মে।