ছবি: সংগৃহীত।
উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলখণ্ড এলাকার মানুষ গত দু’টি লোকসভা এবং ২০১৭-র বিধানসভা নির্বাচনে ঢেলে ভোট দিয়েছেন বিজেপি-কে। আসন্ন বিধানসভা ভোটেও যাতে সেই দুর্গ অক্ষত থাকে, তার জন্য আসরে নামতে চলেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী ১৯ তারিখ বুন্দেলখণ্ডে ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাইয়ের জন্মদিনকে কেন্দ্র করে একটি মহাসম্মেলনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সেখানে থাকার কথা মোদীর।
রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, রাজ্যে ভোটের আগে ঝাঁসির রানির স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং বীরত্বের ভাষ্যে নিজের সিলমোহর বসাতে চান মোদী। বিরোধীদের অভিযোগ, স্বাধীনতার ৭৫ বছর দেশ জুড়ে উদ্যাপন হোক, অথবা সর্দার বল্লভভাই পটেল, মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী অথবা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ঐতিহ্য, বিজেপির রাজনীতির সঙ্গে সব কিছুই মিলিয়ে দিতে চান মোদী। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, এ বার সেই তালিকায় সংযোজিত হতে চলেছেন
ঝাঁসির রানি।
বিজেপি সূত্রের খবর, ১৯ তারিখের অনুষ্ঠানে থাকবেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। বেশ কিছু প্রকল্প এবং যোজনার উদ্বোধন করবেন তাঁরা। পানীয় জলবণ্টন, প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা করিডরের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান, ঝাঁসির কেল্লাকে আলোকোজ্জ্বল করা, ওই এলাকার সৈনিক বিদ্যালয়ের সংস্কার ওই পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে।
বিজেপিকে বার বার জেতালেও বুন্দেলখণ্ডকে এখনও রাজ্যের দরিদ্রতম অঞ্চল হিসাবেই দেখা হয়। এসপি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব তাঁর সাম্প্রতিক বিকাশ যাত্রা শুরু করেছেন বুন্দেলখন্ড থেকে। উন্নয়নের অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। বিষয়টির দিকে নজর রাখছে বিজেপি। আগামী ১৯ তারিখ প্রধানমন্ত্রীর সফরের পর তিন দিন ধরে বর্ণময় অনুষ্ঠান চলবে ঝাঁসির রানিকে কেন্দ্র করে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, ভারতীয় সেনা এবং উত্তরপ্রদেশ সরকারের মিলিত উদ্যোগে হবে এই অনুষ্ঠান। গত বিধানসভা নির্বাচনে কানপুর-বুন্দেলখণ্ড অঞ্চলের ৫২টি আসনে বিজেপি জেতে ৪৭টিতে। উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান সম্প্রতি এই এলাকায় বৈঠক করেছেন দলের কৌশল স্থির করতে।
অন্য দিকে, আজ উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে নিজে লড়াইয়ের কথা ঘোষণা করলেন যোগী আদিত্যনাথ। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, তিনি যে লড়বেন, তা নিয়ে সংশয় ছিল না। কিন্তু ধাপে ধাপে ভাষ্য তৈরি করে বিজেপি একটি জমজমাট এবং ধারাবাহিক ভোট-চিত্রনাট্য তৈরি করতে চাইছে। যোগীর ঘোষণা সেই চিত্রনাট্যেরই অঙ্গ বলে মনে করা হচ্ছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি স্বতন্ত্রদেব সিংহ গতকালই বলেছিলেন, ‘‘যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটে লড়বে দল।’’ তার পর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘোষণা করেন, দল চাইলে তিনি ভোটে লড়বেন। তিনি বর্তমানে উচ্চকক্ষ বিধান পরিষদের সদস্য। জানান, সব সময়ই তিনি লড়াই করেছেন। রাজ্যের যে কোনও আসন থেকে লড়তে তিনি প্রস্তুত। দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনি বলেন, ‘‘দলের নিজস্ব বোর্ড রয়েছে। সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে, আমি কোথা থেকে লড়ব।’’