প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।
মহারাষ্ট্রে করোনা অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গিয়েছে। মধ্যপ্রদেশের পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। সংক্রমণ বাড়ছে খোদ প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে। নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোর খবর আসছে কেরল-তামিলনাড়ুর মতো দক্ষিণের রাজ্য থেকে। দেশে করোনা নতুন করে ছড়িয়ে পড়ায় ফের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আগামিকাল বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের মতে, কাল বেলা ১২টা থেকে ওই বৈঠক শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। মূলত, বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণ ও টিকাকরণ নিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি।
দেশে গত ছ’দিন ধরে দৈনিক সংক্রমণ ২০ হাজারের উপরে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিড-আক্রান্ত হয়েছেন ২৪,৪৯২ জন। তার মধ্যে ১৫ হাজারের বেশি মহারাষ্ট্রেই। কেন্দ্রের পাঠানো বিশেষ পর্যবেক্ষক দল স্বীকার করে নিয়েছে মহারাষ্ট্রে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গিয়েছে। ওই দল রিপোর্টে বলেছে, কোভিড রোগীদের চিহ্নিত করা, পরীক্ষা করানো এবং আক্রান্তদের পৃথক করে চিকিৎসা করানোর ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের গাফিলতি ছিল। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে কোভিড-বিধি অক্ষরে অক্ষরে মানার জন্য উদ্ধব সরকারকে বলেছে কেন্দ্র। সে রাজ্যের মুখ্যসচিব সীতারাম কুন্তেকে লেখা একটি চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ অবিলম্বে আরটি পিসিআর পরীক্ষা বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছেন। প্রতি একশোটি পরীক্ষার মধ্যে অন্তত ৭০টি আরটি পিসিআর করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে, সংক্রমণের শৃঙ্খলকে ভাঙতে এক জন সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা অন্তত ৩০ জনকে পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্রের মতে, কালকের বৈঠকে সংক্রমণ রোখার প্রশ্নে আরও বেশি করে পরীক্ষা করানো ও টিকাকরণে গতি বাড়ানোর প্রশ্নে সওয়াল করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
মহারাষ্ট্রের মৃত্যুহারও কেন্দ্রকে উদ্বেগে রেখেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ঔরঙ্গাবাদের মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যুহার ১১ শতাংশ। নাসিকের বসন্ত রাও পওয়ার মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যুহার জানুয়ারিতে ছিল ১৮ শতাংশ। যা ফেব্রুয়ারিতে বেড়ে হয়েছে ৩১ শতাংশ। সে কারণে ওই এলাকায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের সামগ্রিক জিনোম সিকোয়েন্স করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। নতুন করে ‘ডেথ অডিট’ শুরু করতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে। বাড়াতে বলা হয়েছে টিকাকরণের গতি। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, নিয়ম লঙ্ঘন করলে অর্থদণ্ড তো দিতেই হবে, পাশাপাশি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে অফিস, বাজার, সিনেমা হল,শপিং মলের মতো জনসমাগম হয় এমন জায়গাগুলি। সংক্রমণ রুখতে অবিলম্বে বাসস্ট্যান্ড, স্টেশনের মতো জায়গাগুলিতে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার উপর জোর দিয়েছে কেন্দ্র।
সংক্রমণ রুখতে ভোপালে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। আজ রাত ১০টা থেকে সেখানে রাত-কার্ফু শুরু হয়েছে। ভোপাল প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, মহারাষ্ট্র থেকে আগতদের আবশ্যিক ভাবে যাত্রার ৭২ ঘণ্টা আগে করোনার আরটিপিসি-আর টেস্ট করাতে হবে। যাঁরা ৩-৪ দিন শহরে রয়েছেন, তাঁদেরও আলাদা করে করোনা পরীক্ষা করা হবে। সংক্রমণ বাড়ায় গুজরাতে দর্শক প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে ভারত-ইংল্যান্ড ক্রিকেট ম্যাচেও।