সিঁড়ি ভাঙতে গিয়ে... শনিবার কানপুরে।
‘নমামি গঙ্গে’ দেখতে এসে হুমড়ি খেয়ে পড়লেন ‘নমো’!
জাতীয় গঙ্গা পরিষদের প্রথম বৈঠক। নরেন্দ্র মোদী আজ তাই এসেছিলেন কানপুরে। স্পিডবোটে চড়ে ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পে গঙ্গা সাফাইয়ের কাজ পরিদর্শন করার পরে ‘অটল ঘাট’-এর সিঁড়ি বেয়ে তরতরিয়েই উঠে আসছিলেন প্রধানমন্ত্রী। অগ্র-পশ্চাতে সপ্রতিভ এসপিজি বাহিনী। আচমকা তাঁদের, শ’খানেক টিভি ক্যামেরার, ছোটবড় নেতা-কর্মীর, উত্তরপ্রদেশ ও কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের নিঃশ্বাস বন্ধ করে দিয়ে সিঁড়িতে হোঁচট খেলেন মোদী। পড়েই গেলেন। মাথাটা প্রায় নুয়ে পড়ল সামনের ধাপে। ছুটে এসে প্রধানমন্ত্রীকে ধরে তুললেন এসপিজি অফিসারেরা। মোদীও দ্রুত সামলে নিলেন নিজেকে।
এবং দেখা গেল, কিছুটা পর-পরই ঘাটের ধাপের গায়ে হিন্দিতে লেখা রয়েছে— ‘সাবধান, উঁচু সিঁড়ি!’ যাঁর ফিটনেস ও প্রখর দৃষ্টি কার্যত ‘প্রখর রুদ্র’-সম বলে ভক্তদের বিশ্বাস, এই সতর্কবার্তা তাঁর চোখ এড়াল কী করে, সেটাই প্রশ্ন। অস্বস্তিও।
দেখুন ভিডিয়ো
অস্বস্তি আরও আছে। জিম করবেট অভয়ারণ্যে বেয়ার গ্রিলসের সঙ্গে অ্যাডভেঞ্চারে এক মুহূর্তের জন্যও মোদীর নিরাপত্তাবাহিনীকে দেখা যায়নি ক্যামেরায়। যদিও তাঁরা থাকেন সর্বত্র। কিন্তু কেদারনাথের গুহায় ধ্যান হোক বা সাত লোককল্যাণ মার্গের লনে শরীর-চর্চা— জুতসই ফ্রেমে মোদী সর্বদা একা। প্রতিটি মুহূর্ত যাঁর এমন নিক্তি-মাপা, জনসভার বক্তৃতাও যাঁর টেলিপ্রম্পটারে তৈরি, সেই মোদীরই এমন পতন এবং প্রকাশ্যে অন্যের সাহায্য নিয়ে সামলানোর ঘটনা ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’, বলছে শাসক-বিরোধী দুই শিবিরই। একটি ভিডিয়োতে তো নেপথ্য কণ্ঠকে জোর দিয়ে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘বলছি তো আমি দেখেছি, মোদীজিকে পড়ে যেতে।’’
আরও পড়ুন: উন্নাওয়ে ‘অবিচার’ নিয়ে সরব প্রিয়ঙ্কা
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যে-হেতু দেশের প্রধানমন্ত্রী, তাই সরাসরি এই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি বিরোধী শিবির। যদিও ‘#মোদীফল্স’ ট্রেন্ডিং হয়েছে টুইটারে। ছড়িয়েছে রসিকতা, মিম। যাঁরা করেছেন, তাঁদের কেউ কেউ বিরোধী মনোভাবাপন্ন বলেই পরিচিত। মোদীর পতনের সঙ্গে সব চেয়ে বেশি তুলনা যেমন হয়েছে অর্থনীতি তথা জিএসটি-র। এক জন মোদীর ভিডিয়ো-সহ চটজলদি চুটকি বানিয়েছেন— ‘‘সাংবাদিক: স্যর, দেশের অর্থনীতি কী ভাবে টলমল করছে? মোদী: এই ভাবে।’’ আর এক জনের রসিকতা, ‘‘জিডিপি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে মিল কোথায়? দু’জনেই পড়ে যান!’’ হাল্কা মেজাজেই অনেকে মনে করাচ্ছেন, বহু দিন বাদে আজ পুরনো ঝাঁঝে দিল্লির রামলীলা ময়দানে মুখ খুলেছেন রাহুল গাঁধী। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি আগে বলেছিলেন, তিনি সংসদে মুখ খুললে ভূমিকম্প হবে। কানপুরে আজ ভূমিকম্প হয়নি তো!
এমন রসিকতা মোদী শিবিরের পছন্দ হয়নি, বলা বাহুল্য। কংগ্রেস নেতারাও বলছেন, অতি উৎসাহের বশেও এমন মস্করা ঠিক নয়। তবে এ-ও ঠিক, বিজেপি তো হামেশাই বলে, ‘পাপ্পু’ রাহুল ছাড়া এত মজার খোরাক কোথাও নেই! কাজেই ৫৬ ইঞ্চি ছাতি এই মামুলি হোঁচটকে আমল না-দিলেই হল!