আমদাবাদের রোড শোতে যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই
বাংলায় হারের পর থেকেই কিছুটা ম্রিয়মাণ হয়েছিল ‘ছাপান্ন ইঞ্চি’-র দাপট। প্রশ্ন উঠছিল, এ বার কি তা হলে আর কাজে আসছে না মোদী-ম্যাজিক? বিজেপি-র দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে ‘আচ্ছে দিন’ দেখার আশায় ভোট দেওয়া জনগণ? তবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই আবার ‘মোদী-দাপট’ দেখতে শুরু দেখল দেশবাসী। চার রাজ্যে (গোয়া এখনও ত্রিশঙ্কু) বিজেপি বিধানসভা দখলের পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাবেলা নয়াদিল্লির সদর দফতর থেকে হুঙ্কার দিতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। বলতে শোনা গিয়েছে, ২০২৪ সালে বিজেপি-র ক্ষমতায় আসা আটকানো যাবে না। পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচের ফল প্রকাশের পরের দিন, অর্থাৎ শুক্রবার বেলা গড়াতে না গড়াতেই গুজরাতের আমদাবাদে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে রোড শোতে যোগ দিলেন মোদী। রোড শো থেকে রব উঠল ‘মোদী জি কা জয়’। কিন্তু জয়ী রাজ্যগুলিতে বিজয় উত্সব পালন করতে না গিয়ে কেন তড়িঘড়ি গুজরাটে পাড়ি দিলেন মোদী?
উত্তরপ্রদেশে হাওয়া তৈরি হয়েছিল, রামরাজ্য উত্তরপ্রদেশ থেকে হয়তো পাততাড়ি গোটাতে পারে বিজেপি। ক্ষমতায় আসতে পারে মুলায়ম-পুত্র অখিলেশ যাদবের নেতত্বাধীন সমাজবাদী পার্টির সরকার। কিন্তু বৃহস্পতিবার বেলা গড়াতেই বোঝা গেল, লখনউ থেকে এখনই যাচ্ছেন না যোগী আদিত্যনাথ। উত্তরপ্রদেশের মসনদে বসছেন তিনিই। তবে মোদীও হয়তো বুঝেছেন, ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশ জুড়ে গেরুয়া ঝড় উঠলেও সেই ঝড়ের তীব্রতা কমেছে। যেখানে বিজেপি ২০১৭ সালে একা ৩১২টি আসন জিতেছিল, সেখানে ২০২২ সালে জোট সঙ্গীদের নিয়ে ২৭৩টি আসন পেয়েছে তারা। বিজেপি-র একার দখলে ২৫৫। সুতরাং বেশ খানিকটা পড়েছে ভোটের পরিমাণ। সেই জায়গায় ২০১৭-এর ৪৭ থেকে ২০২২-এর ১১১তে উন্নীত হয়ে অনেকটাই এগিয়ে এসেছে এসপি। এ দিকে গোয়াতেও এখনও ত্রিশঙ্কু হয়ে রয়েছে বিধানসভা। আগে গোয়ার দখল ছিল বিজেপি-র প্রমোদ সবন্ত সরকারের কাছে। তার উপর আবার এই বছরের শেষেই গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচন। তাই হাওয়া গরম থাকতে থাকতেই তা কাজে লাগাতে নামলেন মোদী। তবে বাংলার মতো অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস বা তাড়াহুড়ো নয়, পদক্ষেপ করছেন মেপে মেপে। কারণ মূল লক্ষ্য তো ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন। আর তাই কোনও ঝুঁকি না নিয়েই গুজরাতের মানুষকে আগাম জানিয়ে দিলেন, তিনি আছেন। মানুষও জানান দিল তাঁদের ভরসা আপাতত গেরুয়া শিবিরেই। অন্তত আপাতদৃষ্টিতে আমদাবাদে মানুষের ঢল দেখে মনে হচ্ছে এমনটাই।