প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাতে স্মারক তুলে দিলেন হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর। সোমবার মান্ডিতে। ছবি পিটিআই।
জয়রাম ঠাকুর সরকারের চতুর্থ বার্ষিকী উদ্যাপনে আজ হিমাচল প্রদেশ সফরে ২৮৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যার অর্থমূল্য ২৮ হাজার ১৯৭ কোটি টাকারও বেশি। উদ্বোধনের পাশাপাশি মান্ডির পাড্ডাল গ্রাউন্ডে জনসভাও করেন তিনি। প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলির মধ্যে যেমন জলবিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে, তেমনই প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়েও বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী। তুলে ধরেন পরিবেশ সংরক্ষণে ভারতের ভূমিকা। অতিমারিতে বিজেপি শাসিত হিমাচলে উন্নয়ন প্রকল্প জারি রাখায় রাজ্য সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন মোদী।
প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, রেণুকাজি বাঁধ প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মোদী। প্রায় তিন দশক ধরে এই বাঁধ নির্মাণের কাজ আলোচনার স্তরে ছিল। ৬টি রাজ্য-কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের (হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড ও দিল্লি) সহযোগিতায় এই প্রকল্প রূপায়ণের চিত্র নির্মিত হয়েছে বলে প্রেস বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, ৪০ মেগাওয়াটের এই প্রকল্পটির সম্ভাব্য খরচ ৭ হাজার কোটি। এর ফলে দিল্লিতেও বছরে ৫০ কোটি ঘন মিটার জল প্রতি বছর সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
রেণুকাজির পাশাপাশি আরও তিনটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মোদী। তার মধ্যে রয়েছে লুহরি স্টেজ ১ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প (২১০ মেগাওয়াট), ধৌলাসিধ প্রকল্প (৬৬ মেগাওয়াট) এবং সাওরা-কুড্ডু প্রকল্প (১১১ মেগাওয়াট)।
প্রধানমন্ত্রী আজ জানিয়েছেন, দেশে ২০৩০ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ শতাংশ পুনর্নবীকরণ শক্তি (যেমন, সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি) থেকে উৎপন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। চলতি বছরেই ভারত সেই লক্ষ্যপূরণ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, ২০১৬ সালে পরিবেশের স্বার্থে জীবাশ্ম জ্বালানি বাদ দিয়ে অচিরাচরিত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ৪০ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। তবে ২০৩০ নয়, চলতি নভেম্বরেই সেই লক্ষ্যপূরণ করা সম্ভব হয়েছে।
মোদীর কথায়, ‘‘উন্নয়নকে বজায় রেখে পরিবেশবান্ধব প্রকল্প গ্রহণ করার জন্য গোটা বিশ্ব ভারতের প্রশংসা করছে। পুনর্নবীকরণ শক্তির যথার্থ ব্যবহারে বদ্ধপরিকর দেশ।’’ তবে উন্নয়নের জন্য হিমাচলে একের পর এক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ঘোষণায় পরিবেশবিদদের একাংশের আশঙ্কা, এর ফলে পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। কারণ, হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে নদীর গতিপথ রূদ্ধ হলে তার প্রভাবে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি, ধস ও অন্যান্য প্রতিকূল প্রভাব দেখা পারে। যা ইতিমধ্যেই উত্তরাখণ্ড, হিমাচলে দেখা গিয়েছে।