বাড়ি থেকে কাজের সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধাও ভোগ করতে হচ্ছে কর্মীদের। প্রতীকী চিত্র
করোনাকাল এক নতুন দিন তৈরি করেছে। বাড়ি থেকে কাজ (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) এখন স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। আগে বিশেষ প্রয়োজনে পরিষেবা ও তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা চালু থাকলেও করোনা সংক্রমণ, লকডাউন এবং তার পরেও পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়া পরিস্থিতি বাড়ি থেকে কাজের পরিসর বৃহত্তর করে দিয়েছে। এই ব্যবস্থায় বিভিন্ন সংস্থা কর্মীদের বেশিক্ষণ কাজ করাচ্ছে বা প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা দিচ্ছে না বলেও অনেক অভিযোগ। এই অবস্থায় নতুন দিনের এই ব্যবস্থার জন্য বেসরকারি ক্ষেত্রের কর্মীদের আইনি রক্ষাকবচ দেওয়ার ভাবনা কেন্দ্রীয় সরকারের। সূত্রের খবর, খুব তাড়াতাড়ি যাতে বাড়ি থেকে কাজের জন্য বিশেষ কিছু নিয়ম চালু করা যায় তার জন্য উদ্যোগী হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে প্রাথমিক স্তরের আলোচনা শুরু হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
করোনা সংক্রমণ যখন চরমে উঠেছিল তখন অনেক সংস্থারই কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। এর পরে একটু একটু করে স্বাভাবিক হওয়ার দিকে গেলেও প্রথমে সার্বিক ভাবে বাড়ি থেকে কাজ পদ্ধতি চালু হয়। এখনও অনেক সংস্থার কর্মীরাই বাড়ি থেকে কাজ করেছেন। আবার কোথাও কোথাও মিশ্র ব্যবস্থায় কাজ হচ্ছে। তাতে সপ্তাহের কয়েকটা দিন বাড়ি থেকে এবং বাকি দিনগুলি অফিসে এসে কাজ করতে হচ্ছে কর্মীদের। কিন্তু ভারতে বাড়ি থেকে কাজ করার কোনও আইনি বিধিনিষেধ নেই। করোনাকালের পরে এখন এই ব্যবস্থাকে আইনি করার ভাবনা এমনি এমনি নয়। কারণ, বাড়ি থেকে কাজ হওয়ায় অনেক সংস্থাই কর্মীদের নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে বেশি কাজ করাচ্ছে। কিন্তু তার জন্য কোনও অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দিচ্ছে না। সংস্থাগুলির বক্তব্য, বাড়ি থেকে কাজ করার ফলে কর্মীরা অনেক বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন। যাতায়াতের সময় যেমন বেঁচে যাচ্ছে তেমনই খরচও কম হচ্ছে। অন্য দিকে, কর্মীদের বক্তব্য, যে হেতু বাড়ি থেকে কাজ করানো হচ্ছে তাই কাজের কোনও সময়সীমা থাকছে না। এর থেকে অফিস করা ভাল।
বাড়ি থেকে কাজের ক্ষেত্রে কিছু খরচ বৃদ্ধির কথাও বলছেন কর্মীরা। এর মধ্যে সবার আগে ইন্টারনেট বাবদ খরচ। এর পরে রয়েছে বিদ্যুৎ। কিন্তু এখনও বহু সংস্থাই কর্মীদের এই বাবদ অতিরিক্ত কোনও অর্থ দেয় না। জানা গিয়েছে, কেন্দ্র যে আইনি বিধিনিষেধ তৈরির কথা ভাবছে তাতে বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট বাবদ কর্মীরা যাতে অবশ্যই টাকা পান সে বিষয়টিও দেখা হবে। কোন ক্ষেত্রে কেমন নিয়ম চালু করা যায় তা ঠিক করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থার সঙ্গেও কেন্দ্র কথা বলছে বলে সরকারি সূত্রের জাবি। তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে যে হেতু আগে থেকেই বাড়ি থেকে কাজ পদ্ধতি চালু ছিল তাই সেখানে অনেক নিয়ম এমনিতেই রয়েছে। এখন কেন্দ্রের লক্ষ্য, সব ক্ষেত্রকেই একটি নিয়মে বাঁধা হোক। তবে কবে সেই নিয়ম কার্যকরের কথা কেন্দ্র ভাবছে সে ব্যাপারে এখনও কিছু জানা যায়নি।