এক শালে শীত যায় না, মাফলারে শাহ, মোদী হাইনেকে

শীত বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জবুথবু হয়ে বসে থাকার উপায় নেই।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:১৬
Share:

সাবধানী: ডিসেম্বরের দিল্লিতে অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র

এমন ভাবে মাফলার কি বাঙালিরা ছাড়া আর কেউ বাঁধে! মাথা, কান, গলায় পেঁচিয়ে মাফলারের বাঁধুনিতে উত্তুরে হিমেল হাওয়ার সাধ্যি নেই কামড় বসানোর। অরবিন্দ কেজরীবাল নাকি খড়্গপুরের আইআইটিতে পড়াশোনার সময়ে এ ভাবে মাফলার বাঁধতে শিখেছিলেন। অনেকেই মজা করে বলতেন ‘মাফলারম্যান।’ আর আম আদমি পার্টির প্রধান হিসেবে ‘আমজনতার নেতা’-র ভাবমূর্তির সঙ্গে দিব্যি খাপ খেয়ে গিয়েছিল সেই মাফলার।

Advertisement

দিল্লির ভোট দুয়ারে। এ দিকে তাপমাত্রার পারদ নামতে নামতে চার ডিগ্রি ছুঁয়েছে। দু’দশকে নাকি এমন ঠান্ডা পড়েনি। অথচ কেজরীবালের মাফলার উধাও! তার বদলে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হুডি পরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। লোকে বলছে, এ বার বোধহয় শুধু দিল্লির গরিব মানুষের ভোট নয়, মধ্যবিত্ত, তরুণ প্রজন্মের ভোটও দরকার।

আরও পড়ুন: জামিয়াতেও কাঠগড়ায় উঠল পুলিশ

Advertisement

শীত বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জবুথবু হয়ে বসে থাকার উপায় নেই। ঠান্ডাকে কাবু করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পোশাকের ফাঁক দিয়ে তাই হাইনেক পুলওভার দিব্যি নজরে পড়ছে। বড়দিনের সকালে অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে তাঁর পাঞ্জাবি-শালের নীচেও সাদা হাইনেক। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির বাগানে সূর্যগ্রহণ দেখতে বেরিয়েও সেই হাইনেক জ্যাকেট।

নেট-দুনিয়ায় কেজরীবালকে এক জন প্রশ্ন করেছেন, ‘এখনও মাফলার বের হল না? ঠান্ডা তো বেশ, জনতা জানতে চাইছে স্যর।’ কেজরীবাল সপাটে জবাব দিয়েছেন, ‘মাফলার অনেক দিন হল বিদায় নিয়েছে। বোধ হয় খেয়াল করেননি।’

মোদীর মাফলারে অরুচি নেই। তবে গলায় ঝোলালেও তা কানে-মাথায় পেঁচানোর ধার ধারেন না। মোদীর থেকে বয়সে ১৪ বছরের ছোট হলেও অমিত শাহ এ বিষয়ে সাবধানী। বড়দিনের ঠান্ডায় শাল, মাথা-কান-গলা ঢেকে মোটা মাফলার পেঁচিয়ে রেখেছিলেন। ৬৯ বছর বয়সি মোদীর থেকে বছরখানেকের ছোট রাজনাথ সিংহও চাদর মুড়ি দিয়ে প্রতিরক্ষায় কোনও ফাঁক রাখেননি।

ফ্যাশন ডিজাইনার রিতু কুমার বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে দেখে মনে হয়, উনি কোন পোশাকে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন, সেটাও ভাবেন। তাই যোগাসন বা বাড়ির লনে হাঁটাহাঁটির সময় হাইনেক জ্যাকেটটা বেছে নেন।’’ তবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পোশাকবদল চোখে পড়েছে রিতুরও। তাঁর মতে, ‘‘দিল্লিতে তো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদ চলছে। উনি বোধহয় হুডি পরে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করতে চাইছেন। এত দিনের চটি-সোয়েটার-মাফলার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মোটেই মানানসই ছিল না।’’

দিল্লির শীতের সঙ্গে এখন প্রণব মুখোপাধ্যায় অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু বড়দিনের সন্ধ্যায় প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকেও গলাবন্ধ ছেড়ে পুরু জ্যাকেট গায়ে চাপাতে হয়েছে। রাহুল গাঁধী বরাবর স্লিভলেস জ্যাকেটেই অভ্যস্ত। তার সঙ্গে পাঞ্জাবির নীচে থার্মাল-ওয়্যার। এ বছর বুঝি তাতেও শীত মানছে না। রাহুলকে তাই রাজঘাটে সত্যাগ্রহে গায়ে শাল জড়াতে হয়েছে। মেরঠ যাওয়ার পথে পরেছেন লাল পুলওভার। পাশে প্রিয়ঙ্কাকেও দেখা গিয়েছে গলায় স্কার্ফ, মোটা জ্যাকেটে।

গত শীতে রাহুল গাঁধীর জ্যাকেটের দাম ৭০ হাজার টাকা বলে বিজেপি হইচই বাঁধিয়েছিল। তা বলে রাহুল ‘পাফি’ জ্যাকেট ছেড়ে নেহরু-জ্যাকেটের পথে হাঁটেননি। রিতু কুমারের মতে, ‘‘আসলে নেহরু-জ্যাকেট, পাঞ্জাবি-পাজামা রাজনীতিকদের ট্রেডমার্ক হয়ে গিয়েছে। তবে নেহরু-জ্যাকেট না পরেও হালফিলের রাজনীতিকরা মানুষের সঙ্গে মিশছেন। তাতে অসুবিধা হচ্ছে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement