ছবি: পিটিআই।
বিশ্ব অর্থনীতির ভরকেন্দ্র হল শহর। তা সত্ত্বেও পৃথিবীর প্রায় সমস্ত দেশে শহরের পরিকাঠামো, পরিবেশ, এমনকি সে সব সম্পর্কে চিন্তাধারা যে কত নড়বড়ে, তা দেখিয়েছে কোভিডের কামড়। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে শহুরে পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোর ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর দাবি, এই কাজে ইতিমধ্যেই হাত দিয়েছে তাঁর সরকার। ভারতের পোক্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, বিপুল বাজার এবং শিল্পবান্ধব সরকারি নীতির কথা মনে করিয়ে ওই শহর (স্মার্ট সিটি) গড়ার কাজে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানালেন তিনি।
মঙ্গলবার মোদী বলেন, “শিক্ষা, খেলাধুলো, বিনোদন-সহ যে সমস্ত সুবিধের জন্য মানুষ শহরে থাকতে চান, করোনার আক্রমণের পরে তার অধিকাংশই প্রশ্নের মুখে। মুখ থুবড়ে পড়েছে বহু বড় শহরের অর্থনীতি।” তাঁর মতে, মানসিকতা এবং উন্নয়নের পদ্ধতিতে আমূল বদল না-হলে, শহুরে অর্থনীতির সচল করা শক্ত।
মোদীর দাবি, বহু দেশে বড় শহরে যখন অনেকে করোনার বিধি মানতে চাননি, তখন ভারতের অধিকাংশ শহরে বহু কষ্ট সহ্য করেও লকডাউন-বিধি মেনেছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু করোনার অভিজ্ঞতা দেখিয়েছে, কাজের খোঁজে এত মানুষ যে শহরে আসেন, এ বার সেই শহরকে নতুন ভাবে গড়া জরুরি। আরও বেশি সংখ্যায় কম দামের আবাসন, বাইরে থেকে কাজ করতে আসা কম রোজগারের কর্মীদের থাকার জন্য সস্তায় ভাড়া-ঘরের বন্দোবস্ত, সুবিধাজনক পরিবহণ ব্যবস্থা ইত্যাদি প্রয়োজন। আর ইতিমধ্যেই এই কাজে হাত দিয়েছে কেন্দ্র। তাঁর কথায়, এমন স্মার্ট সিটি তৈরিই লক্ষ্য, যেখানে শহরের সমস্ত সুবিধা থাকবে, কিন্তু পরিবেশ হবে গ্রাম-ঘেঁষা। অর্থাৎ, দূষণের মাত্রা কম হবে। যে কোনও জায়গা থেকে কাজের উন্নত প্রযুক্তি আগামী দিনে এ ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে বলে তাঁর আশা।
আরও পড়ুন: দিল্লির সন্ত্রাস-বিরোধী তোপ চিনকে সঙ্গে নিয়ে
বিরোধীদের প্রশ্ন, শহরে যে পরিকাঠামোর ঘাটতি রয়েছে, তা বুঝতে প্রধানমন্ত্রীকে অতিমারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হল কেন? সেখানে পরিযায়ী শ্রমিক কিংবা ‘দিন আনা-দিন খাওয়া’ মানুষদের কত কষ্টে থাকতে হয়, তা কি তাঁর অজানা ছিল?
আরও পড়ুন: নীলবাড়ি দখলে কোনও নিরীক্ষা নয়, পরীক্ষিত সৈনিকেই ভরসা মোদী-শাহর
এ দিনই দ্বাদশ ‘ব্রিকস’ সম্মেলনে মোদী বার্তা দিয়েছেন, করোনার টিকা তৈরির পাশাপাশি তা অন্য দেশে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রেও ভারত বড় ভূমিকা নেবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘কোভিডের সময়ে, ভারতের ওষুধ শিল্পের দৌলতে দেড়শোরও বেশি দেশে আমরা ওষুধ পৌঁছে দিতে পেরেছি।’’ সঙ্গে মোদী জানান, ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যক্ষেত্রের উন্নতিতে ডিজিটাল প্রযুক্তিকে আরও ব্যবহারের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেবে ভারত।