নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র
চিনের দেওয়া প্রস্তাব মানলে, পূর্ব লাদাখে ভারতের কিছু জমি হাতছাড়া হতে পারে। আবার চিনের প্রস্তাব না-মানলে, পিছু হঠবে না লালফৌজ। এই পরিস্থিতিতে আজ আবার চিনের নাম না-করে সে দেশের উদ্দেশে তোপ দাগলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘সম্প্রসারণবাদ-কে উল্লেখ করলেন ‘মানসিক সমস্যা’ হিসাবে। এর আগেও এক বার চিনকে সম্প্রসারণবাদী বলে নিশানা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দীপাবলি উপলক্ষে জয়সলমের-এর লোঙ্গেওয়ালা সেনা ছাউনিতে যান মোদী। সেখানে তাঁর বক্তব্য, “আজ সারা বিশ্বকে তিতিবিরক্ত করে তুলেছে সম্প্রসারণবাদী শক্তিগুলি। এক দিক দিয়ে সম্প্রসারণবাদ হল মানসিক সমস্যা এবং তা অষ্টাদশ শতকের চিন্তাভাবনা। এই চিন্তাভাবনার বিরুদ্ধে ক্রমশ নিজেদের সুর চড়াচ্ছে ভারত।”
সম্প্রসারণবাদের মোড়কে সমালোচনা করলেও মোদী সরকার কিন্তু এখনও পর্যন্ত চিনের নাম করে বেজিং-কে আক্রমণ করেনি। ট্রাম্প প্রশাসন বার বার সেটা করলেও (এমনকি ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে) তাতে যোগ দেয়নি সাউথ ব্লক। তার কারণ, নয়াদিল্লি এই মুহূর্তে চিনের সঙ্গে বড় মাপের সংঘর্ষের পথে যেতে চায় না। সামরিক এবং কূটনৈতিক স্তরে সূত্র খোঁজার চেষ্টা হচ্ছে। এরই মধ্যে তিক্ততা এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়ে পরিস্থিতি ফের আগের জায়গায় নিয়ে যেতে চায় না নয়াদিল্লি।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, ভারতের বর্তমান চিন-নীতিতে কিছুটা হলেও সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে মস্কোর। রাশিয়া পিছন থেকে ভারত এবং চিনের মধ্যে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে গোড়া থেকেই। রাশিয়ার উদ্যোগেই দু’দেশের বিদেশমন্ত্রীর মধ্যে ভিডিয়ো মাধ্যমে মুখোমুখি বৈঠক হয়েছে। এক দিকে আমেরিকা তথা ট্রাম্প প্রশাসন যখন সুর চড়িয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চিনের ভূমিকার চরম নিন্দা করছে, তখন নীরবে ক্ষত মেরামতির চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে পুতিনের রাশিয়াকে।
সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন ভারতে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত রোমান বাবুস্কিন। তাঁর বক্তব্য, “রাশিয়ার অবস্থানটা খুবই অনন্য। ভারত এবং চিন উভয় রাষ্ট্রের সঙ্গেই আমাদের কৌশলগত এবং বিশেষ কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। এবং সেই সম্পর্ক একে অন্যের উপর নির্ভরশীল নয়। স্বাভাবিক ভাবেই আমরা এই দু’দেশের উত্তেজনায় উদ্বিগ্ন।” তিনি আরও বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি শান্তিপূর্ণ সমাধানই এক মাত্র রাস্তা। সেটা যত দ্রুত হয় ততই ভাল। আমরা চাই এশিয়ায় আমাদের দুই বন্ধু রাষ্ট্রের মধ্যে আরও বেশি করে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করুক।”
আরও পড়ুন: দেশে কমেছে অ্যাক্টিভ রোগী, দাবি কেন্দ্রের
সম্প্রতি সাংঘাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)সম্মেলনের আয়োজন করেছিল রাশিয়া। সেখানে উপস্থিত ছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট এবং নরেন্দ্র মোদী। সেখানে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং ভৌগলিক অখন্ডতা রাক্ষার কথা বললেও মোদী চিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সংঘাতের বিষয়টি নিয়ে কোনও কথা বলেননি। ভারতের এই অবস্থানকে সমর্থন করে বাবুস্কিন বলেছেন, “আমরা ওই বহুপাক্ষিক মঞ্চকে কোনও দ্বিপাক্ষিক সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু করে তুলতে চাইনি।“