—ফাইল চিত্র।
বিলকিস বানোর ধর্ষকদের আবার জেলে না পাঠালে বাড়িতে থাকার সাহস পাচ্ছেন না তাঁরা। এমনই অভিযোগ করে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন গুজরাতের রাধিকপুরের গ্রামে বসবাসকারী বিশেষ একটি সম্প্রদায়ের মানুষ। গুজরাত সরকারের কাছে তাঁদের আবেদন, আবার ওই ধর্ষকদের জেলে ঢোকানো হোক। তা ছাড়া, গ্রামে পুলিশি নিরাপত্তা চেয়েও আবেদন করেছেন তিনি।
গত ১৫ অগস্ট গুজরাত জেল থেকে মুক্তি পেয়েছে সেই ১১ জন, যাঁরা ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করেছিল। তাঁর তিন বছরের মেয়েকে আছড়ে মেরেছিল মায়ের চোখের সামনে। ‘খুন’ হয়েছিলেন বিলকিসের পরিবারের মোট আট জন। ২০০৮ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত সেই ১১ জন ‘আজাদির’ স্বাদ পেয়েছে এই ১৫ অগস্ট। জেল থেকে মুক্তি পেতেই জুটেছে গলায় মালা, মুখে মিষ্টি। এক জন জনপ্রতিনিধি বলেছেন, এই ধর্ষকদের ‘স্বভাব-চরিত্র ভাল’। ধর্ষকদের মুক্তি নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। এ নিয়ে আবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, সিপিএম নেত্রী সুভাষিণী আলি প্রমুখ।
অন্য দিকে, বিলকিসের ধর্ষকদের গ্রামে ফেরার খবর পেতেই সেখানকার বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষরা বাড়ি ছাড়ছেন। অনেকে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন। এমনই এক ব্যক্তি সমীর ঘচির দাবি, ওই ১১ জনের মুক্তির খবর তাঁদের কাছে ছিল না। পরে তাঁরা জেনেছেন। এখন দেখছেন, বিলকিসের ধর্ষক ও তাঁর মেয়ের খুনিরা গ্রামে ফিরতেই উৎসব শুরু হয়েছে। লাউড স্পিকারে গান চলছে। ডিজে আনা হয়েছে। বাজি পোড়ানো হচ্ছে! এ সব দেখেশুনে তাঁরা আতঙ্কে বাড়ি ছেড়েছেন বলে দাবি সমীরের।
সমীর আরও জানান, তাঁরা প্রায় ৫৫ জন একটি চিঠিতে সই করে প্রশাসনের কাছে জমা করেছেন। আবেদন করেছেন আবার ধর্ষকদের জেলে ঢোকানো হোক। ইকবাল আব্দুল নামে এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘যত দিন না এই ১১ ধর্ষক এবং খুনি আবার জেলে যাচ্ছে এবং আমাদের পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হবে, তত দিন আমরা গ্রামে ফিরতে পারব না। আমাদের রুটিরুজির উপর এর প্রভাব পড়ছে। কিন্তু আমরা অসহায়।’’
এর আগে স্ত্রীর ধর্ষকদের মুক্তির ঘটনায় ইয়াকুব রুসুলও জানিয়ে ছিলেন, এক জন দোষী প্যারোলে ছাড়া পেলেও তাঁরা ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতেন। ১১ জনের মুক্তির পর তাঁরা আরও আতঙ্কে রয়েছেন।