ভিড়ের হাতে প্রাণ গেল অভিযুক্তের। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংগৃহীত।
স্ত্রীকে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন। শ্যালিকা-শাশুড়িকে কুড়ুলের কোপ। পুলিশ এলে, গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন ধরানোর হুমকি দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা। কিন্তু শেষ ‘রক্ষা’ হল না। গ্রামবাসীদের মারে মারা গেল ঘাতক যুবক। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের ফতেপুর জেলার গাজিপুর থানার সিমৌর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে ছত্তীসগঢ়ের বাসিন্দা নাসির কুরেশির (৪০) সঙ্গে বিয়ে হয় সিমৌরের অফসরি ওরফে সোনির (৩৫)। চার সন্তানও হয় তাদের। কিন্তু অন্য পুরুষের সঙ্গে সোনির সম্পর্ক গড়ে ওঠার অভিযোগ নিয়ে দু’জনের মধ্যে ঝামেলা বাধে।
সেই নিয়ে লাগাতার অশান্তির জেরে চার সন্তানকে নিয়ে বছর তিনেক আগে বাপের বাড়ি ফিরে আসেন সোনি। দু’দিন আগে তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে শ্বশুরবাড়ি এসে পৌঁছয় নাসির। কিন্তু ফিরে যেতে অস্বীকার করে সোনি। সেই নিয়ে শুক্রবার ঝগড়া চরমে পৌঁছয়। তখনই কুড়ুল দিয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করে নাসির।
আরও পড়ুন: আড়ি পাতা হচ্ছে, ভারত সরকারকে মে মাসেই জানানো হয়েছিল, দাবি হোয়াটসঅ্যাপের
বাধা দিতে গেলে শাশুড়ি অসগরি এবং শ্যালিকা শবনমের উপরও হামলা করে নাসির। তাতে গুরুতর জখম হন দু’জনই। সেই সময় চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ছুটে আসেন পড়শিরা। ভিড় দেখে ভয়ে পেয়ে যায় নাসির। নিজেকে ঘরে বন্দি করে নেয়। তত ক্ষণে আপদকালীন নম্বরে ফোন করে পুলিশকে ডেকে এনেছেন গ্রামবাসীরা।
পুলিশ এসে দরজা ভাঙার চেষ্টা করলে গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় নাসির। তা কাজে না এলে কুড়ুল হাতে পুলিশের দিকেই তেড়ে যায় সে। পালানোর চেষ্টা করে। তখনই তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন উত্তেজিত গ্রামবাসীরা। লাঠিসোটা নিয়ে বেধড়ক মারধর করে। তাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নাসিরের।
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্ক জালিয়াতিতে অভিযুক্ত সংস্থায় প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা! প্রশ্নের মুখে যোগী সরকার
গাজিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সন্দীপ তিওয়ারি সংবাদমাধ্যমে জানান, রাগের মাথায় কুড়ুল দিয়ে স্ত্রী সোনিকে খুন করে কয়েক টুকরো করে নাসির। অন্য পুরুষের সঙ্গে সোনির সম্পর্ক গড়ে ওঠাতেই দু’জনের মধ্যে ঝামেলার সূত্রপাত বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। নাসিরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন সোনির বোন শবনম। গুরুতর আহত অবস্থায় এই মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি তিনি। তবে নিজের বয়ানে গণপিটুনির বদলে, সোনিকে খুন করে নাসির নিজেকেই কুড়ুল মেরে আত্মঘাতী হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। নাসির এবং সোনি, দু’জনের মৃতদেহই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট তদন্তের কাজে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।