ছাত্রাবস্থায় গ্রামেরই এক প্রতিবেশীকে খুনের অভিযোগ ওঠে সূরজ এবং তাঁর দাদার বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার পর থেকেই গ্রামছাড়া ছিল সূরজের পরিবার।
ঘটনাক্রমে তিনি খুনের আসামি। আবার বিচারাধীন বন্দিও। কিন্তু নিজেকে শুধরে নিয়ে সেই আসামির স্বপ্ন এখন বিজ্ঞানী হওয়া। আর সেই স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে জেলের কুঠুরিতে বসেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। স্বপ্নপূরণের এক ধাপ অতিক্রমও করে ফেলেছেন তিনি।
সূরজ কুমার যাদব। বিহারের নওয়াদা জেলার মোসমা গ্রামের বাসিন্দা। রাজস্থানের কোটায় আইআইটি-র জন্য পড়াশোনা করছিলেন। ছাত্রাবস্থায় গ্রামেরই এক প্রতিবেশীকে খুনের অভিযোগ ওঠে সূরজ এবং তাঁর দাদার বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার পর থেকেই গ্রামছাড়া ছিল সূরজের পরিবার।
কোভিডের কারণে দেশ জুড়ে লকডাউনের জেরে ২০২১-এর এপ্রিলে গ্রামে ফেরেন সূরজ এবং তাঁর পরিবার। গ্রামে ফিরতেই সূরজ এবং তাঁর দাদাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। খুনের অভিযোগে সেই সময় থেকে নওয়াদা জেলে বন্দি দুই ভাই।
সূরজ যে এক জন আইআইটি প্রত্যাশী সেটা জানতেন জেল সুপার অভিষেক পাণ্ডে। সূরজের মধ্যে সেই খিদেটা ফের চাঙ্গা করে তুলেছিলেন জেল সুপার। এক জন শিক্ষকের মতো তিনি সূরজের পাশে এসে দাঁড়ান।
তাঁকে বই এনে দেওয়া, তাঁকে গাইড করা এমনকি তাঁর খাওয়াদাওয়ারও ব্যবস্থা নিজ উদ্যোগে করেছিলেন সুপার। এক জন অভিভাবকের মতো জেল সুপারকে কাছে পেয়ে সূরজও যেন নিজেকে আমূল বদলে ফেলার একটা সুযোগ পেয়েছিলেন। আর সেটা হাতছাড়া করতে চাননি। দিনরাত এক করে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন আইআইটি-র পরীক্ষার জন্য। পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য আদালত সূরজকে এক মাসের প্যারোল মঞ্জুর করে।
সম্প্রতি আইআইটি-র জয়েন্ট অ্যাডমিশন টেস্ট ফর মাস্টার্স (জ্যাম) পরীক্ষায় বসেছিলেন সূরজ। সেই প্রবেশিকা পরীক্ষায় সূরজ র্যাঙ্ক করেছেন ৫৪। পরীক্ষায় পাশ করে সূরজ জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে তিনি বিজ্ঞানী হতে চান।