গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
খুব বেশি সময় নেই হাতে। বরং সমুদ্রের জলস্তর যে ভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে এই শতাব্দীর মাঝামাঝি-ই তলিয়ে যেতে পারে গোটা বিশ্বের উপকূলবর্তী একাধিক শহর, যার মধ্যে রয়েছে কলকাতা, মুম্বই এবং নবি মুম্বইয়ের মতো একাধিক শহর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির বিজ্ঞান সংস্থা ‘ক্লাইমেট সেন্ট্রাল’-এর একটি গবেষণায় এ বার এমনই তথ্য উঠে এল। তাতে বলা হয়েছে,জলস্তর বৃদ্ধির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন ৩০ কোটি মানুষ। বাসভূমি হারাতে পারেন ১৫ কোটি মানুষ। এশিয়াতেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
‘ক্লাইমেট সেন্ট্রাল’-এর গবেষণাপত্র ‘নেচার কমিউনিকেশনস’-এ বলা হয়েছে, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সমুদ্রে জলস্তরের ওঠানামা এবং স্থলভূমির উপর তার প্রভাব পর্যবেক্ষণ করে ওই সংস্থা। তাতেই এমন বিপদ সঙ্কেত মিলেছে। দেখা গিয়েছে, ২০৫০-এর মধ্যেই সমুদ্রের জলস্তর উপকূল ছাপিয়ে পাকাপাকি ভাবে উপরে উঠে আসতে পারে।
অত্যধিক পরিবেশ দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এর আগেও এমন আশঙ্কা করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু তাতে বলা হয়েছিল, বিংশ শতকে গোটা বিশ্বে সমুদ্রের জলস্তর ১১-১৬ সেন্টিমিটার বেড়েছিল। বর্তমান শতাব্দীতে তা ৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। কিন্তু ‘ক্লাইমেট সেন্ট্রাল’-এর বিজ্ঞানীদের দাবি, গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবে যে হারে বিশ্ব উষ্ণায়ন বেড়ে চলেছে, তাতে আন্টার্কটিকার বরফের চাদর নির্ধারিত সময়ের আগেই গলতে শুরু করলে, এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে সমুদ্রের জলস্তর ২ মিটারেরও বেশি বেড়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: বিরোধী সাংসদ-নেতাদেরও কাশ্মীরে ঢুকতে দেওয়া উচিত, ইউরোপীয় সদস্যদের মন্তব্যে চাপে কেন্দ্র
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে জঙ্গি হানায় আহত শ্রমিকেরও মৃত্যু হাসপাতালে, হত বেড়ে ৬
এর ফলে, এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ এবং চিনই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের। তাঁদের মতে, বাংলাদেশে ন’কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ সমুদ্র উপকূল অঞ্চলে বাস করেন। চিনে এই সংখ্যাটা চার কোটি ২০ লক্ষ। অবিলম্বে তাঁদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত বলে মত ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের আধিকারিক ডিনা লোনেস্কো। তাঁর কথায়, ‘‘বহু দিন ধরেই সতর্ক করে আসছি আমরা। আমরা জানি কী হতে চলেছে। নাগরিকদের স্থানান্তরিত করতে এখন থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সব দেশের সরকারের।’’