যোগী আদিত্যনাথ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
হাতে মাত্র আট দিন সময়। ৩১ অগস্টের মধ্যে স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তির খতিয়ান না দিলে চলতি মাসের বেতন না-ও পেতে পারেন উত্তরপ্রদেশের সরকারি কর্মচারীরা। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুসারে, আগামী ৩১ অগস্টের মধ্যে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের ‘মানবসম্পদ’ পোর্টালে সম্পত্তির যাবতীয় খতিয়ান দিতে হবে উত্তরপ্রদেশের সরকারি কর্মচারীদের। অন্যথায় তাঁদের চলতি মাসের বেতন বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। এমনকি পদোন্নতিও আটকে যেতে পারে।
বর্তমানে উত্তরপ্রদেশে সরকারের কর্মীর সংখ্যা ১৭ লক্ষ ৮৮ হাজার ৪২৯। গত অগস্ট মাসেই এই বিপুল সংখ্যক কর্মচারীকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সম্পত্তির খতিয়ান জমা দিতে বলা হয়েছিল। পরে দু’বার সেই সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়। প্রথমে ৩০ জুন, পরে ৩১ জুলাই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ২৬ শতাংশ রাজ্য সরকারি কর্মী তাঁদের সম্পত্তির খতিয়ান উত্তরপ্রদেশ সরকারের হাতে তুলে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। অর্থাৎ, এখনও ১৩ লক্ষ কর্মচারীকে সম্পত্তির খতিয়ান দিতে হবে।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব মনোজকুমার সিংহ জানিয়েছেন, ৩১ অগস্টের মধ্যে যে সমস্ত কর্মচারী স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব পেশ করবেন না, তাঁদের চলতি মাসের বেতন আটকে দেওয়া হবে। উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারের তরফে বলা হচ্ছে, রাজ্য প্রশাসনে স্বচ্ছতার খাতিরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে উত্তরপ্রদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়েও রাজনৈতিক বিতর্ক থেমে নেই। বিরোধী দলগুলির বক্তব্য, সরকার যদি দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে এতই উদ্যোগী হবে, তবে বার বার সম্পত্তি পেশ করার সময়সীমা বৃদ্ধি করা হচ্ছে কেন? ২০১৭ সালে যোগী আদিত্যনাথ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি কেন, সেই প্রশ্নও তুলছে বিরোধী দলগুলি। সমাজবাদী পার্টির অন্যতম মুখপাত্র আশুতোষ বর্মার কথায়, “লোকসভা ভোটের পর যোগী আদিত্যনাথ সরকার সঙ্কটে রয়েছে। এখন তারা বুঝতে পেরেছে যে, তাদের সব কর্মী দুর্নীতিগ্রস্ত।”
যদিও উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে দাবি করা হচ্ছে তারা রাজ্য সরকারি কর্মীদের আর অতিরিক্ত সময় দেবে না। আদিত্যনাথ মন্ত্রিসভার এক সদস্যের কথায়, “দুর্নীতির বিষয়ে আমাদের অনড় অবস্থান আগেও ছিল। এখনও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতোই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও দুর্নীতির সঙ্গে আপস করবেন না।’’