কাশ্মীরে যাবে আরও ২৮ হাজার আধাসেনা

২৮০ কোম্পানির অর্থ, ২৮ হাজার। সূত্রের দাবি, এই বাহিনীর অধিকাংশই সিআরপি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন 

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৩৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

কয়েক দিন আগে মোতায়েন হয়েছিল ১০ হাজার। এ বার আরও ২৮ হাজার। কাশ্মীর উপত্যকায় আধাসেনার সংখ্যা বাড়িয়েই চলেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, ২৮০ কোম্পানিরও বেশি আধাসেনা কাশ্মীরে পাঠাতে চলেছে কেন্দ্র।

Advertisement

২৮০ কোম্পানির অর্থ, ২৮ হাজার। সূত্রের দাবি, এই বাহিনীর অধিকাংশই সিআরপি। রাজধানী শ্রীনগর-সহ বিভিন্ন সংবেদনশীল এলাকায় তাদের মোতায়েন করা হচ্ছে। কিন্তু কেন, সেই ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। নয়াদিল্লি থেকেও রাত পর্যন্ত বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ সূত্রের দাবি, অমরনাথ যাত্রার ধকলের পরে ডিউটি বদল হচ্ছে জওয়ানদের। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের নিরিখে সেই যুক্তি নিয়েও প্রশ্নের অবকাশ থাকছে। সম্প্রতি কাশ্মীরে গিয়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর পরে গিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, আইবি এবং র’-এর অধিকর্তারা। এর মধ্যেই ১০ হাজার আধাসেনা মোতায়েন হয়েছে কাশ্মীরে। এবং আজ দু’দিনের সফরে শ্রীনগরে গিয়েছেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত স্বয়ং। নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ে জোর দেন তিনি। দেখা করেন রাজ্যপালের সঙ্গে। এত অল্প সময়ে এই পর্যায়ের সক্রিয়তা সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি কাশ্মীরে। শ্রীনগরে ঢোকা ও বেরোনোর সমস্ত রাস্তার মোড়ে মোতায়েন হয়েছে আধাসেনা। প্রয়োজনীয় সামগ্রী মজুত করা শুরু করেছেন উদ্বিগ্ন উপত্যকাবাসী।

Advertisement

কেন্দ্রের এই তৎপরতার উদ্দেশ্য কি শুধুই স্বাধীনতা দিবসের আগে নিরাপত্তা বাড়ানো, না উপত্যকায় দ্রুত নির্বাচন করানো, নাকি ৩৭০ এবং ৩৫-এ ধারা বিলোপের সলতে পাকানো— সেই জল্পনা স্বাভাবিক ভাবেই আজ আরও বেড়েছে। অনেকের আশঙ্কা, কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা-দেওয়া সংবিধানের ধারাগুলি বিলোপ করা হলে আইন-শৃঙ্খলার সম্ভাব্য অবনতির কথা ভেবেই হয়তো উপত্যকায় বাহিনী বাড়াচ্ছে কেন্দ্র। দু’দিন আগে সংসদে তিন তালাক বিল পাশ হওয়ার সময়ে শিবসেনা বলেই দিয়েছিল, এর পরে ৩৭০-এর পালা।

এ কথা ঠিক যে, মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানার সঙ্গে নভেম্বরের মধ্যেই জম্মু-কাশ্মীরের নির্বাচন সেরে ফেলতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বস্তুত, আজ একই দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) নেতা ফারুক ও ওমর আবদুল্লা। সূত্রের খবর, ৩৭০ এবং ৩৫-এ ধারা প্রত্যাহার নিয়ে কথা হয় তাঁদের। বিরোধীদের মতে, রাজ্যে জোট সম্ভাবনা নিয়েও কথা হয়েছে দু’পক্ষের। কাশ্মীর নিয়ে বিজেপিতে সাংগঠনিক স্তরে রদবদল হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের আর্থিক ভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের সিদ্ধান্তও হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। এই আবহে আজ মোদীর সঙ্গে বৈঠকের পরে এনসি সাংসদ হাসনান মাসুদি বলেন, ‘‘আমরা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি যে, উপত্যকার পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। তাই এমন কোনও পদক্ষেপ করবেন না যাতে সেখানকার শান্তি ভঙ্গ হয়। কারণ ৩৫-এ নিয়ে জল্পনা শুরু হওয়ায় মানুষের মনে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে।’’ ওমর আবদুল্লাও বলেন, ‘‘জনতার ভোটে জিতে আসা নতুন সরকার ঠিক করুক উপত্যকার জন্য ওই ধারা থাকার প্রয়োজন রয়েছে কি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement