—প্রতীকী চিত্র।
প্রেম ভেঙে যাওয়ার পর কোনও ব্যক্তিকে যে মানসিক অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, তার ভিত্তিতে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা করা যায় না। একটি মামলায় সম্প্রতি এমনই মন্তব্য করেছে মুম্বইয়ের আদালত। অভিযুক্ত প্রেমিকাকে মুক্তি দিয়ে আদালতের মন্তব্য, প্রাক্তন প্রেমিকের মৃত্যুর নেপথ্যে ওই মহিলার কোনও হাত নেই।
আদালত অবশ্য এ-ও জানিয়েছে, ইচ্ছামতো একটি সম্পর্ক ভেঙে অন্য সম্পর্কে ঢুকে যাওয়া ‘নৈতিক ভাবে’ অনুচিত। তবে এই ‘অনৈতিকতা’র জন্য আইনি কোনও সমাধান নেই বলে জানিয়েছেন বিচারক।
মুম্বইয়ের বাসিন্দা নিতিন কেনির মৃত্যু হয়েছিল ২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি। তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। নিজের বাড়ি থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতের পরিবারের দাবি, কিছু দিন আগে প্রেম ভেঙেছিল যুবকের। তাঁর প্রেমিকা অন্য এক জনের সঙ্গে সম্পর্কে গিয়েছিলেন। সেই কারণেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন যুবক। তাঁর পরিবারের তরফে ওই প্রেমিকা এবং তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা করা হয়।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, নিজের ইচ্ছা, চাহিদা অনুযায়ী প্রেম ভাঙা এবং সঙ্গী বদল করা নৈতিক ভাবে অনুচিত। কিন্তু আইনের চোখ দিয়ে দেখলে, প্রেম ভাঙার কোনও শাস্তি বা সমাধান নেই। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারা অনুযায়ী, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা করতে গেলে কাউকে সক্রিয় ভাবে মৃত্যুর পরামর্শ বা উৎসাহ দেওয়ার অভিযোগ দরকার হয়। এ ক্ষেত্রে তেমন কোনও অভিযোগ নেই।
মামলাকারীর আইনজীবী দাবি করেছিলেন, অভিযুক্ত তরুণী এবং তাঁর প্রেমিক যুবককে মানসিক ভাবে নির্যাতন করেছিলেন। কিন্তু তার সপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণ দেখাতে পারেননি। অভিযোগ, প্রেম ভেঙে অন্য সম্পর্কে চলে যাওয়ার পরেও প্রাক্তন প্রেমিক তরুণীর পিছু নিতেন। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেছিলেন তরুণী। আদালতের পর্যবেক্ষণ, মৃত যুবক মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন। প্রেমিকার বিয়ের খবর শুনে তিনি আরও ভেঙে পড়েন। এর ফলেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু এর নেপথ্যে তরুণীর কোনও হাত নেই বলে মনে করেছে আদালত।