মধ্যপ্রদেশের রাজগড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছিল এ রকমই একটি বাঁদর। — ফাইল চিত্র ।
দু’সপ্তাহ ধরে ‘বাঁদরামি’ চলছিল শহরের বুকে। আহত হয়েছিলেন প্রায় জনা কুড়ি স্থানীয়। শহরের অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়েছিল হিংস্র বাঁদরের আতঙ্ক। বুধবার সন্ধ্যায় অবশেষে ধরা পড়ল সেই ‘কীর্তিমান’ বাঁদর। মধ্যপ্রদেশের রাজগড় শহরের ঘটনা। দু’সপ্তাহ ধরে সেই শহরের আট শিশু-সহ প্রায় ২০ জনের উপর হামলা চালিয়ে তাদের ঘায়েল করেছিল বাঁদরটি। জেরবার হয়ে প্রশাসনের তরফে বাঁদরটির মাথার দাম হিসাবে ২১ হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছিল।
বুধবার সন্ধ্যায়, প্রশাসন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে বাঁদরটিকে বাগে আনার জন্য অভিযান শুরু করে উজ্জয়িনী থেকে আসা বিশেষ উদ্ধারকারী দল। বাঁদর ধরার জন্য ড্রোন এবং ঘুমপাড়ানি গুলিও ব্যবহার করা হয়। চার ঘণ্টার অভিযান শেষে ধরা পড়ে বাঁদরটি।
বাঁদরটিকে কী ভাবে ধরা হচ্ছে, তা দেখার জন্য বুধবার সন্ধ্যায় রাজগড় শহরের একাধিক জায়গায় ভিড় জমান স্থানীয়েরা। বাঁদরটিকে খাঁচায় পোরার সময় স্থানীয়দের একাংশকে ‘জয় শ্রী রাম’ এবং ‘জয় বজরঙ্গবলী’ স্লোগানও দিতে দেখা যায়।
স্থানীয়দের দাবি, বাঁদরের আক্রমণের কারণে এলাকায় এতটায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল যে, অনেকে একা একা বাড়ির ছাদে পর্যন্ত যেতে ভয় পাচ্ছিলেন। বাঁদরটি বাড়ির ছাদে এবং জানালায় বসে থাকত এবং অতর্কিতে মানুষের উপর হামলা চালাত বলে স্থানীয়েরা জানিয়েছেন।
রাজগড় পুরসভার চেয়ারম্যান বিনোদ সাহুর কথায়, ‘‘পুরসভার পক্ষে বাঁদরটিকে ধরার উপায় ছিল না। আমরা জেলাশাসকের কাছে গিয়েছিলাম এবং তাঁর সাহায্যে উজ্জয়িনী থেকে বন বিভাগের একটি উদ্ধারকারী দলকে ডেকেছিলাম। পৌরসভার কর্মীরা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে চার ঘণ্টা পর বাঁদরটি ধরা পড়ে। আমরা বাঁদরটিকে ধরার জন্য নগদ পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলাম। সেই টাকা উদ্ধারকারী দলের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’
বনকর্তা গৌরব গুপ্ত জানান, ‘‘রাজগড়ের স্থানীয় দল গত দু’সপ্তাহ ধরে বাঁদরটিকে ধরার চেষ্টা করেও সফল হয়নি। আমরা বেশ কয়েকটি জেলার বিশেষ দলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। উজ্জয়িনীর দলের খোঁজ পাওয়া মাত্রই তাদের রাজগড়ে ডেকে পাঠানো হয় এবং বাঁদরটিকে ধরা হয়।’’
বন্দি বাঁদরটিকে কোথাও ছেড়ে দেওয়া হবে, না চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাওয়া হবে, সে প্রশ্নের উত্তরে গৌরব বলেন, ‘‘বাঁদরটিকে একটি ঘন জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে, যাতে এটি মানুষের ক্ষতি করতে না পারে।’’