প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।
দেশের বাজারে পেট্রল, ডিজেলের চাহিদা মেটাতে ৮০-৮৫ শতাংশ অশোধিত তেলই আমদানি করতে হয় দিল্লিকে। ভিন্ দেশ থেকে আনতে হয় অর্ধেকের বেশি প্রাকৃতিক গ্যাস। শুধু এই দুই খাতে ফি বছর গড়ে গুনতে হয় যথাক্রমে ১০,২০০ এবং ১,০০০ কোটি ডলার। কিন্তু এই আকণ্ঠ আমদানি-নির্ভরতার বাস্তব মেনেও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, আত্মনির্ভর ভারত গড়ার লক্ষ্যে শক্তি ক্ষেত্রে (তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ইত্যাদি) দেশকে স্বনির্ভর দেখতে চান তিনি। এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগের অন্যতম গন্তব্য হয়ে ওঠার রসদ ভারতের ভাঁড়ারে মজুত বলেও তাঁর দাবি।
আজ ‘ইন্ডিয়া এনার্জি ফোরাম’-এর মঞ্চে ভিডিয়ো বক্তৃতায় নরেন্দ্র মোদী বলেন, আত্মনির্ভর ভারত গড়তে দিল্লি দৃঢ়সঙ্কল্প। তার অঙ্গ হিসেবে শক্তি ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা কেন্দ্রের অগ্রাধিকার। সে জন্য তেল-গ্যাস-বিদ্যুতে যে বিপুল অঙ্কের বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন, তার উপযুক্ত চাহিদা, পরিকাঠামো এবং নীতি ভারতের রয়েছে।
একে অশোধিত তেল আমদানিতে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা গুনতে হয়। তার উপরে রয়েছে দূষণের সমস্যা। এ কথা মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী দিনে লক্ষ্য— পরিবহণে গ্যাসের ব্যবহার বাড়ানো এবং কয়লা-তেলের ব্যবহারে দূষণ কমানোর প্রযুক্তি প্রয়োগ। ২০৩০ সালের মধ্যে বিকল্প বিদ্যুৎ উৎপাদনকে ৪৫০ গিগাওয়াটে নিয়ে যাওয়া। এর সঙ্গে হাইড্রোজেনের মতো নতুন জ্বালানির ব্যবহার, শক্তি ক্ষেত্রে আরও বেশি করে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারেও জোর দিয়েছেন তিনি। মনে করিয়েছেন, প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন ও উৎপাদনে উৎসাহ দিতে কী ভাবে সুবিধা দেওয়া হয়েছে তার বিপণনে। শুরু হয়েছে ই-নিলাম পদ্ধতি। কিন্তু পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তেলে আমদানি নির্ভরতা কমেনি। দেশে উৎপাদন কমায় বরং আমদানি বেড়েছে প্রাকৃতিক গ্যাসের। তেল-গ্যাস ক্ষেত্রে আসা বিদেশি লগ্নির বড় অংশও গিয়েছে বেসরকারি সংস্থার শেয়ার হাতবদলে। ফলে নতুন করে উৎপাদন ক্ষমতার বৃদ্ধি তেমন হয়নি।
আরও পড়ুন: পঞ্জাবের রাবণ-দহনে কেন মোদীর মুখ! বিতর্ক
দূষণের জন্য ভারতকে দুষে তার বাতাসকে ‘নোংরা’ বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু এ দিন মোদী শুনিয়েছেন, কী ভাবে এলইডি বাল্ব ব্যবহার করে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের নির্গমন বছরে ৪.৫ কোটি টন কমেছে। দাবি করেছেন, এ দেশে কার্বন নির্গমনের হার তলার দিকে। দূষণ মোকাবিলাতেও ভারত দায়বদ্ধ।
আরও পড়ুন: দিল্লির দূষণ দমনে আইন শীঘ্রই: কেন্দ্র