—প্রতীকী চিত্র।
ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত এক কিশোরকে মুক্তি দিল বম্বে হাইকোর্ট। নিজের ১৫ বছরের খুড়তুতো বোনকে ধর্ষণের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। ঘটনার সময় একই ছাদের নীচে বসবাস করছিল তারা। পারস্পরিক সম্মতিতেই দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বলে যদিও দাবি করেছে ওই কিশোর। মেয়েটিও তা মেনে নিয়েছে। তাই ছেলেটিকে সাজা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে রায় দিয়েছে আদালত। আদালতের মতে, অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি আইনত এখনও ‘অস্পষ্ট’। কারণ নাবালিকার সম্মতিকে কখনও ‘সম্মতি’ বলে ধরা হয় না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে নাবালিকার বয়ানের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছ। প্রথমে ধর্ষণের অভিযোগ আনলেও পরে নিজেই নিজের বয়ান থেকে সরে আসে সে।
যে কিশোরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা চলছিল, বর্তমানে তার বয়স ১৯। ২০১৭ সালে ঘটনাটি ঘটে। সেই সময় মেয়েটির বয়স ছিল ১৫। ছেলেটিও সেই সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল বলে জানা গিয়েছে। ২০১৭-র সেপ্টেম্বরে স্কুলের এক সহপাঠীর কাছে প্রথমে মুখ খোলে মেয়েটি। জানায়, দাদা তার সঙ্গে অনুচিত আচরণ করেছে। তার পর থেকেই পেটে যন্ত্রণা হচ্ছে তার। তাকে অবসাদে ভুগতে দেখে ওই সহপাঠী স্কুলের এক শিক্ষিকাকে বিষয়টি জানায়। মেয়েটির কাছে সব খুঁটিয়ে জেনে ওই শিক্ষিকা আবার প্রধান শিক্ষাকাকে সব জানান। ২০১৮-র ৩ মার্চ ওই শিক্ষিকাই মেয়েটির হয়ে থানায় এফআইআর দায়ের করেন। সেই সময় আদালতে মেয়েটি জানায়, ২০১৭-র সেপ্টেম্বর, অক্টোবর এবং ২০১৮-র ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে যৌন হেনস্থা করা হয়।
এফআইআর দায়ের হওয়ার সময় ডাক্তারি পরীক্ষায় মেয়েটির শরীরে কোনও আঘাত ধরা পড়েনি যদিও। এর পর অপরাধ আইনের ১৬৪ ধারার আওতায় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে বয়ান রেকর্ড করে মেয়েটি। সেখানে যদিও পারস্পরিক সম্মতির কথা মেনে নেয় সে। এক বার, দু’বার নয় চার-পাঁচ বার দু’জনের মধ্যে শারীরিক ঘনিষ্ঠতা হয়েছে বলেও জানায়। এমনকি শিক্ষিকার চাপেই থানায় অন্য বয়ান দিতে বাধ্য হয়েছিল বলেও সে জানায়।
সেই মামলায় নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয় ওই কিশোর। তাকে ১০ বছরের সাজা শোনানো হয়। নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সম্প্রতি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ছেলেটি। জামিনের আবেদনও জানায়। সেখানে সমস্ত প্রমাণপত্র খুঁটিয়ে দেখে ছেলেটির সাজা বাতিল করে আদালত। আপাতত জামিন দেওয়া হয়েছে তাকে। পরে তার আবেদনেরও শুনানি করবে আদালত।