কিভে গুলি খাওয়া ভারতীয় ছাত্রের কপালে হাত বুলিয়ে তাঁকে দেশে ফেরার বিমানে তুললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভিকে সিংহ।
কিভে গুলি খাওয়া ভারতীয় ছাত্রের কপালে হাত বুলিয়ে তাঁকে দেশে ফেরার বিমানে তুললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভিকে সিংহ। সোমবার তাঁরই তত্ত্বাবধানে পোল্যান্ড থেকে ভারতে ফেরার বিমানে সওয়ার হলেন ভারতীয় ছাত্র হরজ্যোৎ সিংহ।
হরজ্যোৎ গত মাসে কিভে সেনা হামলার শিকার হয়েছিলেন। রাইফেলের গুলি এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়েছিল হরজ্যোতের পা এবং কাঁধের হার। হাসপাতালে দিনের পর দিন সে ভাবেই পড়েছিলেন। এমনও অভিযোগ করেছিলেন যে, ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনও লাভ হয়নি। কারণ তারা সাড়া দেয়নি। কিভের ভারতীয় দূতাবাসের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগও এনেছিলেন ৩১ বছরের ভারতীয় ছাত্র। সেই হরজ্যোৎ যখন অ্যাম্বুল্যান্সে করে এসে পৌঁছলেন পোল্যান্ডের বিমানবন্দরে ভারতীয়দের জন্য অপেক্ষারত বিমানের সামনে, তখন তাঁকে স্বাগত জানাতে এগিয়ে এলেন স্বয়ং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কপালে হাত বুলিয়ে দিলেন। এমনকি ছাত্রের মাথায় মনোবল বর্ধক হালকা চাপড়ও মারতে দেখা গেল মন্ত্রীকে। পোল্যান্ডের ভারতীয় দূতাবাস সূত্রে খবর, ওই বিমানেই হরজ্যোৎ এবং ইউক্রেন থেকে বেরিয়ে আসা আরও ২০০ ভারতীয়কে নিয়ে দেশে ফিরবেন ভিকে।
ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে ভারত সরকার অপরেশন গঙ্গা প্রকল্প চালু করেছে। যেখানে ইউক্রেনে থাকা ভারতীয়রা সীমা অতিক্রম করে ইউক্রেনের পড়শি দেশ পোল্যান্ড, রোমানিয়া বা হাঙ্গেরিতে এলে তাঁদের উদ্ধার করে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেশে। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে অপরেশন গঙ্গার শেষ পর্যায়ের উদ্ধার কাজ। পোল্যান্ড থেকে ভারতীয় বায়ুসেনার সি-১৭ বিমান প্রায় ২০০ জন ভারতীয়কে নিয়ে রওনা হয় ভারতের উদ্দেশে। সেই বিমানেরই যাত্রী হরজ্যোৎ।
হরজ্যোতের সঙ্গে তাঁর কথাবার্তার দৃশ্যটির একটি ভিডিয়োও নেট মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন ভিকে। ভারতে তৈরি মাইক্রোব্লগিং সাইট ‘কুজ’-এ ওই ভিডিয়ো প্রকাশ করে বিবরণীতে ভিকে লেখেন, ‘ভারতীয় বায়ুসেনার উদ্ধারকারী বিমান সি-১৭-এ দেশে ফিরছেন হরজ্যোৎ সিংহও। দেশে তাঁর জন্য যাঁরা উদ্বিগ্ন, তাঁদের জানাতে চাই হরজ্যোৎ দায়িত্ব এখন উপযুক্ত হাতে। ওঁর খারাপ সময় কেটে গিয়েছে। আমি হরজ্যোতের সঙ্গে ওঁর পরিবার সাক্ষাতের অপেক্ষা করছি। এবং আশা করছি, ও দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।’
প্রসঙ্গত, ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া এবং ইউক্রেন বাহিনীর যুদ্ধ চলাকালীন কিভ থেকে এলভিভে যেতে গিয়ে গুরুতর জখম হন হরজ্যোৎ। তাঁকে বহুবার গুলি করা হয়। হরজ্যোৎ জানিয়েছিলেন, একটি বুলেট তাঁর কাঁধে এসে লাগে। তাঁর বুক থেকেও একটি গুলি বের করেন চিকিৎসকরা। গুলিতে পায়ের হাড়ও ভেঙে যায় হরজ্যোতের। কিভের সিটি হসপিটালে থাকাকালীন হরজ্যোতের আক্রান্ত হওয়া এবং তাঁকে ভারতীয় দূতাবাসের সাহায্য না করা নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয় দিল্লিতেও।
সোমবার পোল্যান্ড থেকে দিল্লিতে হরজ্যোৎদের বিমান অবতরণ করার কথা সন্ধে ৭টা নাগাদ।